দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকের কাছে গেলে তার রোগের লক্ষণ শোনার পর চিকিৎসকের মনে হলো ওই ব্যক্তির কোলন ক্যান্সারও হতে পারে।
এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য কোলনোস্কোপি করা হয়। ক্যামেরাটি অন্ত্রের (ট্রান্সভার্স কোলন) কিছুদূর যাওয়ার পর, চিকিৎসকরা যা দেখলেন তা দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যান। সেখানে একটি অক্ষত জীবন্ত মাছি বসে রয়েছে!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি রাজ্যে এই বছর ঘটনাটি ঘটেছে। আমেরিকান জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইউনিভার্সিটি অফ মিসৌরি স্কুল অফ মেডিসিনের চিকিৎসকরা জানান যে, কোলনোস্কোপির সময় পাওয়া এই তথ্য বিরল। কিভাবে একটি জীবন্ত মাছি ট্রান্সভার্স কোলনে উড়ে যায় এটি একটি রহস্য বলা যায়।
ওই রোগী বলেন, কীভাবে মাছি তার শরীরে ঢুকলো, সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাও নেই। তার কোনো উপসর্গও ছিল না। ওই রোগী আরও বলেন যে, কোলনোস্কপির জন্য তাকে খালি পেটে যেতে বলা হয়। তিনি আগের দিন শুধু তরল খাবারই খেয়েছিলেন। একদিন না খেয়ে থাকা শুরুর আগের সন্ধ্যায় তিনি পিৎজা এবং লেটুস পাতা খেয়েছিলেন। তবে সেই খাবারে মাছি ছিল কি-না তার মনে পড়ছে না।
উল্লেখ্য যে, মানুষের অন্ত্রে মাছি ও মাছির লার্ভা পাওয়া যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে এটি আসলেও বিরল। কখনও কখনও মানুষ মাছির ডিম ও লার্ভাযুক্ত খাবার খেতে পারে। সেই ডিম কিংবা লার্ভা পাকস্থলীর অ্যাসিডে বেঁচেও থাকতে পারে। বেঁচে থাকলেই তা শরীরের অভ্যন্তরে বড় হতে পারে। এর আগেও পচেঁ যাওয়া কলায় মাছির ডিম পাওয়ার ঘটনা ঘটে। সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) অনুসারে জানা যায়, কিছু রোগীর পেটে এইভাবে মাছি ঢুকলেও তাদের কোনো উপসর্গই থাকে না। তবে অনেকের পেটে ব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org