দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গুহার ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া ১৬টি জীবাশ্মকে ঘিরে মানবজাতির ইতিহাসে নতুন এক রহস্য দেখা দিয়েছে। মানবদেহগুলোর চোয়ালের হাড়ের বৈশিষ্ট্যে আদি ও আধুনিক মানুষের একটি অদ্ভুত মেলবন্ধনও পাওয়া গেছে!
গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে, মানব প্রজাতির মধ্যে এটি হলো নতুন একটি জাত। পূর্ব চীনের একটি গুহা থেকে এমন সব জীবাশ্ম উদ্ধারের পর নড়েচড়ে বসেছেন বিজ্ঞানীরা।
মানবজাতির ইতিহাস সম্পর্কিত সাময়িকী জার্নাল অফ হিউম্যান ইভোলিউশনে প্রকাশিত ওই অনুসন্ধানটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ৩ লাখ বছরের পুরোনো এইসব হাড়গুলো। এরা মূলত প্রাচীন মানব প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। তবে এদেরকে এ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
পূর্ব চীনের আনহুই প্রদেশে হুয়ালংডং নামে এই প্রজাতির বসবাস ছিলো এমন একটি গুহা খুঁড়ে বিজ্ঞানীরা অন্তত ১৬ জন মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পান। তারা প্রায় ৩ লাখ বছর পূর্বে পৃথিবীতে ছিলেন। এদের মধ্যে একজন কিশোরও রয়েছে।
বেইজিংয়ের মেরুদণ্ডীপ্রাণীর জীবাশ্মবিদ্যা এবং জীবাশ্মবিদ্যাবিদ্যার ইনস্টিটিউটের জীবাশ্ম-নৃতত্ত্ববিদ জবিই উই ও তার সহকর্মীরা ২০১৯ সালে প্রথম মাথার খুলির বর্ণনা দেন। তবে পরের বছর পাওয়া অনেকগুলো প্রাণীর হাড় থেকে তারা একটি টুকরো শনাক্ত করতে সমর্থ হন। এটি ছিলো চোয়ালের নীচের অংশের।
আবিস্কারটি আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণের পর তারা ধারণা পেয়েছেন যে, হুয়ালংডং প্রজাতি মানব ইতিহাসের আসলে কোন সময় পৃথিবীতে ছিল। আধুনিক ও প্রাচীন উভয় প্রজাতির বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ রয়েছে এইসব হাড়ে। চোয়ালের হাড়টি ছিল পুরু, যে বৈশিষ্ট্যটি আদি মানব প্রজাতি হোমো ইরেক্টাসের সঙ্গেও মিল রয়েছে। উপরের চোয়ালের সঙ্গে যুক্ত অংশটি খানিকটা সরু যার সঙ্গে আধুনিক মানুষ হোমো সেপিয়েন্সের প্রধান বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিলও রয়েছে।
তবে নতুন এই দাবির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন সংডং বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানী ইয়ামেং ঝং। তিনি বলেন, ইউরোশিয়ার আদি মানবজাতির অনেকের বসবাস ছিল। এরা ৮ লাখ থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার বছর এই সময়কালে সেখানেই বসবাস করতেন। তবে নতুন আবিস্কৃত এইসব হাড় মানুষের আদি প্রজাতির কি-না সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। -খবর নেচার জার্নালের।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org