দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইফতারের সময় কমলার জুস খেয়ে ফেলায় এক বাংলাদেশিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করলো তারই এক পাকিস্তানি সহকর্মী। ১৯ মার্চ মালয়েশিয়ার একটি কারখানার শ্রমিক হোস্টেলে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
এই ঘটনায় করা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ওই শ্রমিককে গ্রেফতার করে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মালয়েশিয়া পুলিশ। দেশটির শাহ আলম জেলা পুলিশের প্রধান সহকারী কমিশনার ইকবাল ইব্রাহীম সাংবাদিকদের বলেছেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৫১ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ওই পাকিস্তানির বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। ২০ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২৬ মার্চ তার রিমান্ড শেষ হবে।
ইতিপূর্বে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ১৯ মার্চ সেকশন ৩৬ কারখানার শ্রমিক হোস্টেলে ৪৯ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি ইফতার করার সময় অভিযুক্ত ওই পাকিস্তানির কমলার জুস খেয়ে ফেলেন। এতে করে ওই পাকিস্তানি নাগরিক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অভিযুক্ত পাকিস্তানি ব্যক্তি রান্নাঘর থেকে ছুরি এনে বাংলাদেশি নাগরিককে একাধিকবার আঘাত করেন।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউ স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশকে খবর দেন ও এর ১০ মিনিট পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত পাকিস্তানিকে গ্রেফতার করে। এই সময় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি পুলিশ জব্দ করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় তদন্ত করা হচ্ছে। এই ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড বা ৩০-৪০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়ে থাকে। মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া হলে অন্তত ১২ বার বেত্রাঘাতও করা হবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org