দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজায় আবারও ত্রাণ বিতরণকারী দলের ওপর ইসরায়েলের বিমান হামলা ২৭ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলা ছাড়াও আরও কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে যে, মধ্য গাজার আল নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। -খবর: আল-জাজিরার।
জানা যায়, শরণার্থী শিবিরে একটি তিনতলা আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার পর ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আহতদের উদ্ধার করে দেইর এল-বালাহের আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়।
অপরদিকে ইসরায়েলে কানাডার অস্ত্র রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাটজ। তিনি বলেছেন যে, ইতিহাস কানাডার এই ধরনের পদক্ষেপের কঠোর বিচার করবে।
এদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ বলছে, উত্তর গাজায় ৭০ শতাংশ মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে জর্ডান হয়ে দুই হাজার টনের বেশি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে গেছে গাজায়।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে যে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার মানুষের মধ্যে এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। খাদ্যের সঙ্গে সঙ্গে তাঁবু এবং কম্বলও ত্রাণ হিসেবে পাঠানো হয়। ইউনিসেফের মাধ্যমে এইসব তাঁবু এবং কম্বল বিতরণ করা হবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, আরও সাহায্য পেতে আমাদের সড়কপথে টেকসই মানবিক প্রবেশাধিকার দরকার। আমরা ইসরায়েলকে আরও ক্রসিং খোলার অনুমতি দিতে ও দীর্ঘ সময়ের জন্য গাজায় স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে চাপ অব্যাহত রেখেছি।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের গাজায় গত ৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার ও নির্মম হামলায় ১৩ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে যে, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে উত্তর গাজায় মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ক্ষুধা এবং অপুষ্টিতে কাতর এই শিশুদের অনেকেরই শরীরে কান্না করার মতো পর্যাপ্ত শক্তিও নেই।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org