ভারত থেকে ৫০,০০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, এমপি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) রবিবার বিকেলে নগরীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় তার কার্যালয়ে “প্রয়োজনীয় জিনিসের দামের উপর সিন্ডিকেট এবং প্রতিযোগিতার প্রভাব” শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, এমপি ও বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ও আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ুন রশীদ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান, সরকারের সাবেক সচিব এবং এনবিআরের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ, আইনি অর্থনীতিবিদ ও আইবিএফবির ভাইস প্রেসিডেন্ট এম.এস. সিদ্দিকী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

Related Post

প্রধান অতিথি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু তার বক্তব্যে বলেন, বাজারের স্থিতিশীলতা পণ্যের চাহিদার যোগান এবং অন্য বেশ কিছু বিষয়ের উপর নিভর করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী ও বৈশ্বিক সংঘাতের মতো বিভিন্ন সমস্যা কখনও কখনও বাজারকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। তবে সরকার বাজারে কোনো অনৈতিক আচরণ শনাক্ত করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।

বাজারের অস্থিরতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকার ১০ মিলিয়ন পরিবারের জন্য টিসিবির পরিবার কার্ডের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্রদের সহায়তা প্রদান করে।

পেঁয়াজের বর্তমান বাজার সম্পর্কে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের চুক্তিকে প্রভাবিত করবে না। চুক্তি অনুযায়ী ৫০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ ধীরে ধীরে বাংলাদেশে আসবে। ভারত থেকে আমাদের পেঁয়াজ ইতিমধ্যেই ট্রেনে চড়েছে যা দর্শনা রুট দিয়ে দুই কিংবা তিন দিনের মধ্যে পৌঁছাবে।

প্রধান উপস্থাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজার সিন্ডিকেশনের বড় ধরনের অভিযোগ রয়েছে- সরকার সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছে। আসলে মূল্য স্তর ও মূল্য ওঠানামা মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, যেহেতু মানুষের আয় দামের ওঠানামার সাথে আনুপাতিকভাবে বাড়ছে না, তারা মূল্য স্তরের পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তিনি একটি উন্নত সরবরাহ শৃঙ্খল, কৃষি পণ্যের সঠিক স্টোরেজ ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণের পরামর্শ দেন, বাজারের কারসাজি রোধে ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

মূল বক্তব্য অনুসারে, ২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্য সূচকের প্রবণতা প্রকাশ করেছে যে এটি বিশ্বের জন্য মোটামুটি ৩ গুণ বেড়েছে, যেখানে বাংলাদেশের জন্য ৫ গুণ বেড়েছে। তার মানে খাদ্যের মূল্য স্তরের পরিবর্তনগুলো সাধারণভাবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ঘটনা দ্বারা চালিত হয়।

মিঃ তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাজারের আনুষ্ঠানিকীকরণ, বাজারের অপূর্ণতা যাচাই করার ব্যবস্থা ও তথ্যের ফাঁক কমানো অত্যাবশ্যক। তিনি বলেছিলেন যে, পুলিশিং এবং মূল্য নির্ধারণের মতো পদক্ষেপগুলি বিশেষত কৃষি পণ্যের জন্য বাজারের গতিশীলতায় কাজ করে না।

আইবিএফবি এর কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করে এর সভাপতি জনাব হুমায়ুন রশীদ বলেন, অনেক দিন থেকেই এটা একটা ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যায়। চিনি, সয়াবিন তেল, চাল, আলু, খেজুরসহ অনেক পণ্যের দাম গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

কিছু চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে তিনি পণ্যের বাজারে বিনিয়োগকৃত কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি রোধ, সরবরাহ শৃঙ্খলা, বিতরণ ব্যবস্থার উন্নতি এবং সিন্ডিকেশন প্রতিরোধ ও বাজার স্থিতিশীল করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে দৃঢ় সমন্বয় নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ কম্পিটিশন কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, সব মূল্যবৃদ্ধি নিছক বাজারের সিন্ডিকেশনের ফল নয়। দাম বাড়ার পেছনে রয়েছে নানা কারণও। দেশের কর ব্যবস্থায় বিভিন্ন পরিবর্তন হয়েছে যখন বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্থিরতার কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। বাজারকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিসিসি সিন্ডিকেশন বা কোনো অসৎ আচরণ শনাক্ত করলে তার বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে।

ডিএনসিআরপির শফিকুজ্জামান বলেন, কিছু অর্থনৈতিক তত্ত্ব দৃশ্যত বাংলাদেশের পণ্য বাজারে কাজ করে না। ভোক্তাদের আচরণ শিক্ষিত করার জন্য একটি শক্তিশালী প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন পণ্যের বাজারের চাহিদা ও উৎপাদনের ডেটা প্রাপ্যতা অত্যাবশ্যক।

ডক্টর মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, কর আরোপের ৬ মাস আগে করের হার পরিবর্তনের ওপর করের প্রভাব পরিমাপের জন্য গবেষণা হওয়া উচিত। শুল্ক বাড়ানো সত্ত্বেও ফল আমদানি করা হলেও ভালো বিক্রি হচ্ছে যা বোঝায় সক্ষমতা ভোক্তার রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আয় বৈষম্য এখন দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা।

এম এস সিদ্দিকী বলেন, অর্থ সরবরাহ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিনিময় হার ও সিন্ডিকেশন মূল্য বৃদ্ধির কিছু সাধারণ কারণ। সিন্ডিকেশনের ভুল সংজ্ঞার কারণে বাজার অর্থনীতির ধারণা ত্রুটিহীন নয়। তিনি অস্বাভাবিক বাজার মূল্যের পিছনে কারণগুলো নির্ধারণের জন্য দেশের বাজারের গতিশীলতার গভীরে ডুব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপরেও জোর দেন।

খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on মার্চ ২৫, ২০২৪ 10:58 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

এখন থেকে বড় পর্দায় দেখা যাবে রাতের স্বপ্ন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…

% দিন আগে

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে