দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাস বা গাড়ি নয়, বিমান বা নৌকাবিহার করলেও অনেকের গা গোলায়, বমি পায়। পাহাড়ের পাকদণ্ডী পথে এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা পরিভাষায় এটিকে বলা হয় ‘মোশন সিকনেস’। দীর্ঘক্ষণ কোনও যানবাহনে চড়লেই এমন সমস্যা দেখা দেয়, কিন্তু কেনো? চিকিৎসকরা বলেছেন, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিভিন্ন রকমভাবে গতি অনুভব করে। সেইসব অঙ্গ থেকে সঙ্কেত পৌঁছে যায় সরাসরি মস্তিষ্কে। বিভিন্ন দিক থেকে আসা পৃথক পৃথক সঙ্কেত গ্রহণ করে মস্তিষ্কের স্নায়ুও ধাঁধায় পড়ে যায় অনেক সময়। কী করতে হবে বুঝে উঠতেই পারে না। আর তখনই মাথা ঘোরা, গা গোলানো ভাব কিংবা বমি বমি ভাব দেখা দেয়। তবে, ‘মোশন সিকনেস’ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
মোশন সিকনেস নিয়ন্ত্রণ করতে গাড়িতে ওঠার পূর্বে যা করতে হবে
# এমন যাদের হয় তারা চলন্ত বাসে উঠে বই পড়বেন না কিংবা মোবাইলে কোনও লেখা পড়বেন না।
# যারা এই ধরনের সমস্যায় ভোগেন, তারা বাস কিংবা গাড়িতে উঠে সব সময় সামনের সিটে বসার চেষ্টা করে থাকেন এবং সেটিই করা উচিত। পিছনের দিকে না বসাই উত্তম।
# আর বমি পেলে কিংবা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে বাস কিংবা গাড়ির জানালা খুলে দিন। বাইরের হাওয়া আপনাকে সতেজ রাখতে সাহায্য করবে।
# ভ্রমণের সময় সঙ্গে রাখতে পারেন জোয়ান, গন্ধলেবুর পাতা, পানি কিংবা জিনজার মিনি প্যাকেট। এগুলো সাময়িকভাবে আপনাকে স্বস্তি দেবে।
# যেদিকে গাড়ি চলছে সেদিকেই মুখ করে বসুন।
# ভ্রমণের পূর্বে ভরপেট কোনো কিছু না খাওয়াই ভালো। হাল্কা কোনও খাবার খেয়ে গাড়িতে উঠতে হবে। তাই বলে ভুলেও খালি পেটে উঠবেন না।
# ভ্রমণ শুরুর পূর্বে খেয়ে নিতে পারেন একটি বমির ওষুধ, তাতেও কাজ হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org