দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৈশাখের সেই গান ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো…মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ আজ ১লা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। বাঙালিদের এক আনন্দের দিন।
চৈত্রের রুদ্র দিনের পরিসমাপ্তির মাধ্যমে গতকাল (শনিবার) ১৪৩০ সালকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ যুক্ত হলো নতুন আরেকটি বছর। আজ (রবিবার) পহেলা বৈশাখ। আজকের সূর্যের নতুন আলোর সঙ্গে এলো ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আজ (রবিবার) সরকারি ছুটি।
বৈশাখ বরণে মেতে ওঠলো পুরো বাঙালি জাতি। ভোরে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার মাধ্যমে বাঙালিদের চিরাচরিত দিনটির শুভ সূচনা ঘটবে। ঐতিহ্যবাহী রমনার বটমূলে আয়োজিত হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সংবাদপত্র ও সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন এবং বেতারে নববর্ষের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পহেলা বৈশাখ বরণ উপলক্ষ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তৈরি মঙ্গল শোভাযাত্রার বিভিন্ন মুখোশ এবং প্রতীক শোভা পায়।
এদিকে গতকাল শনিবার (১৩ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর রমনা বটমূলের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবাই যেনো উৎসব সুষ্ঠুভাবে উদযাপন করতে পারেন সেইজন্য র্যাবসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বদা সজাগ অবস্থানে রয়েছে। পহেলা বৈশাখ কেন্দ্র করে প্রত্যেক বছরের ন্যায় এবারও র্যাব সারাদেশ ব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষে না হওয়া পর্যন্ত র্যাবের ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং টহল জোরদার করেছে।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে দি ঢাকা টাইমস্ এর পাঠক-পাঠিকা, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন- শুভ নববর্ষ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org