ভুল করে রান্নায় দু’বার লবণ পড়ে গেলে সেই খাবার খেলে কোনও ক্ষতি হবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি খানিকটা সোডিয়াম শরীরের জন্য ভালো। তবে এটি অতিরিক্ত হয়ে গেলে, তা নানাভাবে ক্ষতিও করতে পারে। সেই কারণে লবণ মেপে খেতে বলা হয়ে থাকে।

কাজে বেরোনোর পূর্বে তাড়াহুড়ো করে রান্না করতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি লবণ পড়ে গিয়েছে। হাত পুড়িয়ে রান্না করা সেই পদে পানি, লেবুর রস, সেদ্ধ আলু মিশিয়েও লবণের মাত্রা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। অনেকটা পরিমাণে রান্না করা খাবার ফেলে দিতেও কিন্তু মন চাই না। বাড়ির বয়স্কদের শরীর খারাপও হতে পারে, সেই সব ভেবে তাদের লবণে পোড়া খাবার দেবেন না। তবে নিজেও যদি সেই খাবার খেয়ে নেন, তাহলে শরীরের খুব ক্ষতি হবে? এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, লবণে অনেক পরিমাণ সোডিয়াম থাকে। খানিকটা সোডিয়াম শরীরের জন্যও ভালো। তবে সেটি অতিরিক্ত হয়ে গেলে, তা নানাভাবে ক্ষতিও করতে পারে। সেই কারণেই লবণ মেপে খেতে বলা হয়ে থাকে।

অতিরিক্ত লবণ শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয় কেনো?

Related Post

অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। কারও কারও আবার রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। হৃদযন্ত্রের শিরা-ধমনী সংক্রান্ত সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস করলে একটা সময়ের পর কিডনি বিকল হতে পারে। এছাড়াও হজমের সমস্যা, হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা যায়। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, অতিরিক্ত লবণ দেওয়া খাবার ডিমেনশিয়ার প্রবণতাও বাড়িয়ে দেয়।

উচ্চ রক্তচাপ

লবণ বেশি খেলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রাও তখন বেড়ে যায়। যা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার জন্যে দায়ী। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেটি রক্তবাহিকার উপর চাপও সৃষ্টি করতে থাকে। যে কারণে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

কিডনির সমস্যা

শরীরে তরলের মাত্রা ঠিক রাখতে হলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই কিডনি। অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে তরলের পরিমাণও বেড়ে যায়। যে কারণে কিডনির উপর চাপও পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির উপর চাপ পড়তে থাকলে এটি বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

ওয়াটার রিটেনশন

আবার অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে তরলের মাত্রাও বাড়তে থাকে। এই অতিরিক্ত তরলই শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জমতেও শুরু করে। পায়ের পাতা, গোড়ালি কিংবা হাতের বেশ কিছু অংশে ফোলা ফোলা ভাব দেখা যায়। সেখান থেকেই প্রদাহ বাড়তে পারে।

তাহলে কী লবণ একেবারেই অপ্রয়োজনীয়?

চিকিৎসকরা বলেছেন, লবণের মধ্যে রয়েছে আয়োডিনের মতো খনিজ। যা থাইরয়েড হরমোনের কাজকর্ম ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এই লবণ। শরীরের ক্রিয়াকলাপ সচল রাখতে অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানের মতো সোডিয়ামও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। তবে বেশি পরিমাণ কোনও কিছুই ভালো নয়। একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত সোডিয়াম খেতেই পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on এপ্রিল ৯, ২০২৪ 4:13 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বন্দুকধারীর গুলি: আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে গুলি করে অজ্ঞাত বন্দুকধারী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম…

% দিন আগে

পৃথিবীতে এমন ৫টি দেশ রয়েছে যেখানে ২৪ ঘণ্টাই দিনের আলো থাকে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি বিশ্বের প্রায় জায়গাতেই ১২ ঘণ্টার দিন, ১২ ঘণ্টার…

% দিন আগে

সত্যিই এক অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% দিন আগে

গবেষণা যা বলছে: বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো? কেও কেও বলেন, শরীরে…

% দিন আগে

ওজন ঝরাতে লেবু পানিতে দ্রুত উপকার পেতে সঙ্গে মেশাতে হবে আরও কয়েকটি উপাদান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ লেবুতে থাকা ফাইবারের কারণেই পেটভার হয়ে থাকে। অন্য কিছু…

% দিন আগে

সন্তানের হাতে যেসব সেটিংস বদলে দেবেন স্মার্টফোন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজকাল ৮ থেকে ৮০ সবার হাতেই স্মার্টফোন। এর সুবিধা যেমন…

% দিন আগে