মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দু’বেলা দাঁত মাজার পাশাপাশি কিছু নিয়মও মানতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মুখের স্বাস্থ্যের সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থারও সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে মুখগহ্বর অর্থাৎ মুখের ভিতর তৈরি হওয়া ব্যাক্টেরিয়া রক্তবাহিকার মধ্যে প্রবেশ করলেই সমূহ বিপদ ঘটতে পারে।

আমরা সবাই জানি সকালে উঠে দাঁত মাজতে হয়। অনেকেই রাতে খাবার খাওয়ার পরেও নিয়ম করে ব্রাশ করেন। তবে তারপরও যদি মুখের দুর্গন্ধ দূর না হয় বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়তেই থাকে, তাহলে কী করবেন?

এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, মুখের দুর্গন্ধ বা দাঁতের খাঁজে আটকে থাকা খাবারের অবশিষ্টাংশ বের করতে দাঁত মাজা বা ফ্লসিং করাই যায়। মুখের ভিতর তৈরি হওয়া ব্যাক্টেরিয়া রক্তবাহিকার মধ্যে প্রবেশ করলে সমূহ বিপদ ঘটতে পারে। স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, এমনকি প্রসবকালীন জটিলতাও বেড়ে যায়। মুখের স্বাস্থ্যের সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সম্পর্কও রয়েছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদেরও মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বিশেষভাবে প্রযোজ্য। চিকিৎসকরা মনে করেন, বাড়ন্ত বয়সে দাঁতের স্বাস্থ্য যদি খারাপ হয়ে যায়, সেই ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও মজবুত হবে না।

Related Post

দাঁত ভালো রাখতে কী করতে হবে?

ফ্লসিং

দাঁত ভালো রাখতে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। যেমন সরু সুতোর সাহায্যে দু’টি দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার বের করে নেওয়ার পদ্ধতিকেই বলা হয়ে থাকে ‘ফ্লসিং’। প্রতিবার খাওয়ার পরই দাঁত মাজা সম্ভব না হলে, মুখ ধুয়ে নিয়ে তারপর করা যেতে পারে ফ্লস। এই পদ্ধতিতে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসে খুব সহজেই। তবে সকলেই কিন্তু ফ্লসের পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত নন। সেই ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করে কিংবা চিকিৎসকের কাছ থেকে শিখে নেওয়াই উত্তম।

গার্গল করা

সর্দি বা কাশির জন্য নয়, মুখের ভিতরের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও গার্গল করা দরকার। বিশেষ করে মিষ্টিজাতীয় খাদ্য, ফলের রস কিংবা ঠাণ্ডা নরম পানীয় খাওয়ার পর মুখের লালার পিএইচ-এর ভারসাম্যও নষ্ট হয়। গার্গল করলে সেটি আবার আগের পর্যায়ে ফিরে আসে। মুখের ভিতরের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গেলে অম্লভাব কাটাতেই হবে। কারণ হলো, এর থেকেই দাঁতের ক্ষতি হয় বেশি হয়।

নিয়মিতভাবে জিভ পরিষ্কার রাখা

খাদ্য খাওয়ার পর খাবারের বেশ খানিকটা অংশ অনেক সময় জিভের উপরেও থেকে যায়। দাঁত মাজার পর জিভ পরিষ্কার না করলে খুব সহজেই ব্যাক্টেরিয়া সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসতে পারে। তাই নিয়মিত জিভ পরিষ্কার রাখতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on এপ্রিল ৯, ২০২৪ 6:00 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

গাজা এবং লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৪৫

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননজুড়ে ভয়াবহ হামলা চলমান রেখেছে…

% দিন আগে

এখন থেকে বড় পর্দায় দেখা যাবে রাতের স্বপ্ন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…

% দিন আগে

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে