দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই গরমে রোদে বেরোলে মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। এক বার অস্বস্তি শুরু হলেই সারা দিন ভোগান্তি হয়। প্রতিদিনের এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দাওয়াই হতে পারেন এক ভেষজে।
এই বসন্তের মৌসুমে কখনও তীব্র গরম, কখনওবা আবার হালকা বৃষ্টি হবে সেটিই স্বাভাবিক। এমন সময় বাড়িতে বাড়িতে সর্দি-কাশি, জ্বর বা ভাইরাল সংক্রমণ লেগেই থাকে। এমন সমস্যা হলে মুঠো মুঠো ওযুধ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের মধ্যেই। দাওয়াইয়ে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক এবং বেদনানাশক ওষুধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে অনেক। এইসব সমস্যার দাওয়াইও হতে পারে অশ্বগন্ধা। এছাড়াও বাতের ব্যথা, অনিদ্রা থেকে বার্ধক্যজনিত সমস্যা- এই সব সমস্যা নিরাময়েও অশ্বগন্ধার কোনও বিকল্পও নেই। অশ্বগন্ধায় থাকে অ্যালকালয়েড ও স্টেরয়ডাল ল্যাক্টোনস্ নামক একটি যৌগ। এছাড়াও এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যামাইনো এসিড। শরীর চাঙ্গা রাখতে এই ভেষজ কীভাবে কাজে লাগে সেটি আজ জেনে নিন।
# সর্দি-কাশি, গলাব্যথার সমস্যা হতে রেহাই পেতে অশ্বগন্ধার মূল গুঁড়ো করে খেতে পারে। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের ক্ষেত্রেও অশ্বগন্ধা কাজে লাগে। শ্বাসকষ্ট থাকলেও এই ভেষজ খেলে কিন্তু উপকার পাবেন।
# বাঙালিদের ১২ মাসে ১৩ পার্বণ লেগেই থাকে। সেইসঙ্গে লেগে থাকে ভূরিভোজ। গ্যাস্টিক, আলসার, পেটব্যথা নিরাময়ে ভীষণ উপকারী অশ্বগন্ধা। গরমের দিনে হজমের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এই দাওয়াইয়ের উপর ভরসাই রাখতে পারেন।
# আর অশ্বগন্ধা দ্রুত শক্তি এনে শরীর চাঙ্গা করে। অশ্বগন্ধার মূল এবং পাতা স্নায়ুর বিভিন্ন রোগের উপশমে কাজে আসে।
# যৌনজীবনে ভাটা পড়লে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করতেও অশ্বগন্ধার ভূমিকা রয়েছে অপরিসীম। শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এই ভেষজ।
# সাম্প্রতিক সময় মানসিক চাপের কারণে ঘরে ঘরে অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। ভালো ঘুমের জন্য চিনিসহ অশ্বগন্ধা গুঁড়ো ঘুমোনোর পূর্বে খেতে পারেন। এতে করে অনিদ্রার সমস্যাও দূর হবে। মানসিক এবং শারীরিক দুর্বলতা, যেমন- মাথা ঝিমঝিম করে ওঠা, হঠাৎ সংজ্ঞাহীন হওয়ার মতো সমস্যা, অবসাদ কাটাতে অশ্বগন্ধা সাহায্য করে। গরমের দিনে মাইগ্রেনের সমস্যাও বেড়ে যায়। এই ক্ষেত্রেও অশ্বগন্ধা বেশ কাজে আসে। আবার অশ্বগন্ধার ভেষজ গুণ মনঃসংযোগও বাড়াতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org