দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জীবন-যাপনে কিছু নিয়ম করে চলা উচিত। কারণ নিয়ম করে না চললে অনেক রকম সমস্যার সম্মুখিন হতে পারেন। যারমধ্যে অন্যতম হলো লিভারের সমস্যা। কোন কাজ নিয়মিত করলে লিভারের রোগে আক্রান্ত হতে পারেন? এগুলো জানা থাকলে আপনারই উপকার হবে।
অনেকেই মনে করেন, কম তেলমশলার খাবার খাওয়া, বাড়ির খাবারে অভ্যস্ত হওয়া, এবং মদ না খাওয়া— এই অভ্যাসগুলোই লিভারকে ভালো রাখার অন্যতম একটি উপায়। কথাটা খুব একটা ভুলও নয়। তবে এগুলোই কিন্তু শেষ কথা নয়। লিভার ভালো রাখতে মেনে চলতে হয় আরও বেশ কিছু নিয়মকানুন। সেগুলো আসলে কী কী?
জীবন-যাপনে নানা ধরনের অনিয়মের কারণে লিভারের অসুখ বর্তমানে ঘরে ঘরে দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের কিছু বদভ্যাস এবং ভুলের কারণে শরীরে বাসা বাঁধে লিভারের অসুখটি। শিশুদের ক্ষেত্রেও তাদের বাবা-মায়েরা যদি প্রথম থেকে একটু সচেতন হন, তাহলে জীবনশৈলীর উপর ছোটবেলা থেকে একটা নিয়ন্ত্রণ তৈরি হবে। বড়দেরও উচিত লিভার ভালো রাখার উপায়গুলো আয়ত্তে নিয়ে আসা। অনেকেই মনে করেন, কম তেলমশলার খাবার খাওয়া, বাড়ির খাবারে অভ্যস্ত হওয়া এবং মদ না খাওয়া— এইসব অভ্যাসগুলোই লিভারকে ভালো রাখার অন্যতম উপায়। যদিও কথাটা খুব একটা ভুল নয়। তবে এগুলোই কিন্তু শেষ কথা নয়। লিভার ভালো রাখতে মেনে চলতে হয় আরও বেশ কিছু নিয়মকানুন। সেগুলো আসলে কী কী?
চিনি বর্জন করুন
খুব সহজে রোগা হতে গিয়ে অনেকেই নিজের খুশি মতো ডায়েট প্ল্যান বানিয়ে নেন। চিনি এড়িতে কৃত্রিম চিনির উপরে ভরসা করেন। এই মনোভাবটি আগে বর্জন করুন। এতে করে আসলে চরম ক্ষতি করছেন শরীরের। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের লিভারের ব্যাপক ক্ষতিও করে। ফ্রুকটোজ কিংবা কৃত্রিম চিনি লিভারের অসুখও ডেকে আনতে পারে। খাদ্যতালিকায় প্রাকৃতিক শর্করা জাতীয় খাদ্য রাখতে হবে।
ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা
মানব শরীরে কার্বহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সঠিক ভারসাম্য রাখাটা ভীষণভাবে জরুরি। ইদানীং বাড়ির খাবারের তুলনায় রেস্তোরাঁর খাবার, বাইরের কেনা ভাজাভুজি, প্যাকেটজাত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে ঝোঁক বেড়েছে অনেকের। অথচ এর জেরেই ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা বাড়ছে শরীরে। লিভারের শত্রু হলো ট্রান্স ফ্যাট। লিভারের চারপাশেই জমতে থাকে এই ফ্যাট। যে কারণে এই অঙ্গের কার্যকারিতাও তখন হ্রাস পায়। সে কারণে খাদ্যতালিকায় পরিমিত মাত্রায় রাখুন ট্রান্স ফ্যাট।
যখন-তখন বেদনানাশক ওষুধ খাওয়া বন্ধ করুন
বেশ কিছু পেনকিলার রয়েছে যেগুলো লিভারের উপর কুপ্রভাব ফেলে। টাইলেনল কিংবা কোলেস্টেরলের ওষুধও লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে থাকে। তাই নিজের চিকিৎসা নিজে না করাই ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ খাওয়া মোটেও চলবে না। অনেকেই ঘুম না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করে দেন। এই অভ্যাসের কারণে লিভারের জটিল রোগেও ভুগতে হতে পারেন।
শরীরে পানির ঘাটতি হতে দেবেন না
শরীর থেকে যতোটা টক্সিন বের করে দিতে পারবেন, লিভার ততোটাই সুস্থ থাকবে। তাই বেশি করে পানি খেতে হবে। তবেই প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের টক্সিন পদার্থগুলো বেরিয়ে যাবে। দিনে কয়েক বার গরম পানিতে পাতিলেবুর রস দিয়ে সেই পানি খান। ডায়েটে রাখুন টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক জাতীয় জিনিস। টুকটাক অনিয়ম সামাল দিতে এরা আপনার সহায় হতে পারে। তেল-মশলাদার খাওয়া-দাওয়া হলেই ডায়েটে এদের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতে হবে।
মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে
মানসিক নানা অবসাদ, উদ্বেগ শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ আরও বাড়িয়ে দেয়। এটি হরমোন লিভারের ক্ষতি করে। মানসিক চাপ কিংবা মনখারাপ ভুলতে অনেকেই খাবার কিংবা মদের মধ্যেই নিজেদের মুক্তি খুঁজে পান। এই অভ্যাস থেকে অবশ্যই দ্রুত বেরিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে ধ্যান করুন, মনোবিদের পরামর্শও গ্রহণ করতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org