দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পরিমাণে একটু বেশি আম খেলেই গ্যাসের মতো সমস্যা হয় অনেকের। আম পেটের স্বাস্থ্যের অবনতিও ঘটাতে পারে। বিশেষ করে, যারা সারা বছরই গ্যাস, বুকজ্বালা, পেটফাঁপার সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাঁদের আম থেকে দূরে থাকার পরামর্শই দেন চিকিৎসকরা।
সকালে উঠেয় আম। দুপুরে টিফিন সারার পরও কয়েক টুকরো আম। আবার সন্ধ্যায় অফিস থেকে বেরিয়ে গলা ভেজাতে এক গ্লাস আমের জুস। রাতের খাবারে আবারও আম, দুধ, রুটি থাকতেই পারে। গরম পড়ার পর অনেকেই আম দিয়েই চার বেলার ভোজ সারেন। হিমসাগর, ফজলি, আম্রপালি, ল্যাংড়া আম দিয়ে করেন গ্রীষ্মের উদ্যাপন। আম খেতে তো ভালোই লাগে, সঙ্গে এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, কে-এর মতো উপাদানও। ফাইবার, কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ আম শরীরের খেয়াল রাখে না, এমন কিন্তু নয়। তবে অত্যাধিক আম খাওয়ার কিছু অস্বাস্থ্যকর দিকও রয়েছে। যেগুলো মাথায় না রাখলে গরমের দিনে মুশকিলেও পড়তে হতে পারে আপনাকে।
পরিমাণে একটু বেশি আম খেলেই গ্যাসের মতো সমস্যা হয় অনেকের। আম পেটের স্বাস্থ্যের অবনতিও ঘটাতে পারে। বিশেষ করে, যারা সারা বছরই গ্যাস, বুকজ্বালা, পেটফাঁপার সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাঁদের আম থেকে দূরে থাকার পরামর্শই দেন চিকিৎসকরা। তবে প্রশ্ন হলো কেনো? চিকিৎসক শুভম সাহা বলেছেন, ‘‘গ্যাসের রোগীদের জন্য আম খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। কারণ আমে থাকা ফ্রুক্টোজ়, সুক্রোজ় অনেকেরই কিন্তু সহ্য হয় না। কারও কারও ‘ফ্রুক্টোজ় ইন্টলারেন্স’ও থাকতে পারে। তারা যদি দিনে ৩-৪টি আম খেয়ে ফেলেন, তাহলে পেটের সমস্যা হতেই পারে। তাই আমের মৌসুম বলেই প্রচুর আম খেয়ে ফেলতে হবে, এমন ভাবনা মোটেও ঠিক নয়। শরীরের খেয়াল রেখে তবেই আমের স্বাদ নেওয়া ভালো।’’
তাই পেটের খেয়াল রাখতে হলে আম খেতে হবে নিয়ম মেনে তবেই। চিকিৎসকরা বলেন, ‘‘খালি পেটে আম না খাওয়াই উত্তম। সব সময় ভরা পেটে তবেই আম খেতে হবে। আম খাওয়ার অন্তত কয়েক ঘণ্টা আগে আম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। আম সব সময় ঠাণ্ডা করে তবেই খাওয়া ভালো। অনেকেই দুধ কিংবা দইয়ের সঙ্গে আম খান। সব আমই সমান মিষ্টি নয়। কিছু আমে অ্যাসিডের পরিমাণও একটু বেশি থাকতেই পারে। তাই দুগ্ধজাত খাবারের সঙ্গে আম না খাওয়াই উচিত।’’ তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org