দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হিসাববিহীন জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, প্রাত্যহিক বিভিন্ন বদভ্যাসই স্তন ক্যান্সার ডেকে আনতে পারে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগেটি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তখন বাড়ে। তবে ২০-৩০ বছর বয়সিদেরও সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। কাদের এই রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে?
সাধারণত মহিলারা সবচেয়ে বেশি যে সব ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, এরমধ্যে অন্যতম হলো এই স্তন ক্যান্সার। বয়স নির্বিশেষে যে কোনও মহিলার দেহেই এই ক্যান্সারটি বাসা বাঁধতে পারে। এমনকি, পুরুষের শরীরেও দেখা দিতে পারে এই স্তন ক্যান্সার, তবে পুরুষদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি একেবারেই কম। প্রাথমিক অবস্থাতেই ধরা পড়লে রোগ নিরাময়ের সুযোগ অনেকটা বেশি থাকে। তবে বহু ক্ষেত্রেই রোগ ধরা পড়ে অনেকটা দেরিতে। ঠিক কী কারণে এই রোগটি হয়, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও হিসাববিহীন জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, প্রাত্যহিক বিভিন্ন বদভ্যাস এই মারণরোগটি ডেকে আনতে পারে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তবে ২০-৩০ বছর বয়সিদেরও সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়।
কাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে?
# পরিবারের কারও ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে।
# হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি আরও বাড়ায়।
# স্তনে কোনও রকম সংক্রমণ কিংবা অন্য কোনও ধরনের রোগ হলে।
প্রতিদিনকার জীবনে কোন কোন অভ্যাসে বদল আনলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে আসবে
# আমাদের জীবনযাপনে অনিয়ম করলে চলবে না। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও তখন বিঘ্নিত হয় না।
# খাওয়া-দাওয়ার অনিয়মেও ওজন বাড়ে। বাইরের তেল-ঝাল-মশলা জাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাসে রাশ টানাটা অত্যন্ত জরুরি। শরীরের ওজন বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেলেই স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এইসব থেকে বদল আনতে ডায়েটে বেশি করে ফল, শাক-সব্জি, গোটা শস্য, লিন প্রোটিন বেশি করে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
# বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, সন্তানকে স্তন্যপান করালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে আসে। স্তন্যদানের সময় শরীরে হরমোন ঘটিত নানা রকম বদল হয়, যা স্তনের কোষগুলোর অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি রোধ করতেও সাহায্য করে।
# স্তনে কোনও রকম অস্বাভাবিক বদল দেখলে সতর্ক হতে হবে। স্তনে কোনও রকম মণ্ড দেখতে পেলে কিংবা স্তনবৃন্তের রং বদলে গেলে, স্তনবৃন্ত থেকে কোনও রকম তরল বের হলে বা স্তনে ব্যথা হলে অবহেলা না করে তাৎক্ষণাত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কারণ স্তন ক্যান্সার প্রথম অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য হওয়া যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org