দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই মাইগ্রেনের ব্যথায় কাতর হয়ে পড়েন। তবে আগে থেকে মাইগ্রেনের উপসর্গ বুঝতে পারলে ও কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকলে যন্ত্রণা মারাত্মক আকার ধারণ করার পূর্বেই রুখে দেওয়া সম্ভব।
বর্তমান এই সময়ে বাইরে বের হলেও চড়া রোদ, ভ্যাপসা গরম। অফিসে এসির কনকনে ঠাণ্ডা। এরমধ্যে আবার সারাদিন ঠায় ল্যাপটপে চোখ রেখে কাজ করা। এইসব কিছুর দোসর মাইগ্রেন। কাজের চাপে এমনিতেই সারাদিন মাথা দপদপ করতেই থাকে। তবে সেই কষ্ট যে ক্রমেই মাইগ্রেনের যন্ত্রণায় পরিণত হবে, তা বুঝতেও পারেননি।
‘মাইগ্রেন রিসার্চ ফাউন্ডেশন’-এর দেওয়া এক তথ্য বলছে, আমেরিকায় প্রায় ৩ কোটি ৯ লক্ষ মানুষ মাইগ্রেনে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ভারত-বাংলাদেশেও সেই সংখ্যাটা নেহায়েত কম নয়। তবে আগে থেকে মাইগ্রেনের উপসর্গ বুঝতে পারলে ও কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকলে যন্ত্রণা মারাত্মক আকার ধারণ করার পূর্বেই রুখে দেওয়া সম্ভব।
# যদি আপনি প্রাইভেট চালান তাহলে রাতে গাড়ি চালানোর সময় উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির আলো মাথা ব্যথা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ক্লাব বা থিয়েটারের বিকট আওয়াজও মাইগ্রেনের কষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই মাইগ্রেনের যন্ত্রণা শুরু হচ্ছে বুঝতে পারলে বিকট শব্দ ও উজ্জ্বল আলো— এই দুটি থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
# এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, এমন কিছু খাবার রয়েছে- যেগুলো খেলে মাথা যন্ত্রণা আরও বেড়ে যেতে পারে। যেমন- চকলেট, রেড ওয়াইন, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও চিজ় ইত্যাদি। মাথা যন্ত্রণা হলে এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলুন।
# বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মাইগ্রেনের সঙ্গে হরমোনের নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। অনেক মহিলা বলেন, প্রায় প্রতি মাসেই ঋতুস্রাব চলাকালীন বা ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পূর্বে তারা মাইগ্রেনে আক্রান্ত হন। এতো ঘন ঘন না হলেও পুরুষদেরও হরমোনের হেরফের হতেই পারে। কখন হরমোনের মাত্রা ওঠা-নামা করছে সেটি বুঝতে পারলে সেই বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org