দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আসলে বাইরে থেকে অনেক কিছু মনে হলেও, অনেক সময়ই মনের বাঁধন আলগা হয়ে যায়। সম্পর্ক মানসিকভাবে যে পোক্ত রয়েছে, তা বোঝার উপায়টি জানা একান্ত দরকার।
একটি প্রশ্ন আসে আর তা হলো সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি কী? তার উত্তর হয়তো অনেকের অজানা। তবে সুখী জীবনের অন্যতম অঙ্গই হলো সঙ্গীর সঙ্গে দৃঢ় মানসিক বন্ধন। নিরাপত্তা, নিশ্চয়তা। সম্পর্ক অর্থই যে তাতে মানসিক সংযোগ দৃঢ় হবে, এমনটি কিন্তু নয়। তবে যে সম্পর্কে সেই রকম নিশ্চয়তা থাকে, সেখানে দম্পতি যে সুখে বসবাস করবেন, সে বিষয়ে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না।
সম্পর্ক মানসিকভাবে দৃঢ় কি না সেটি বোঝার উপায় কী?
# মনের মানুষের কাছে মনের কথার কোনো রাখঢাক না করে বলে ফেলা যায় কী? যে সম্পর্কে সেটি হয়, সেই সম্পর্কের মধ্যে অবশ্যই মানসিক সংযোগ থাকবে। শুধু মনের কথা বলায় নয়, একে অন্যের প্রতি সম্মান সম্পর্ককেও দৃঢ় রাখার অন্যতম শর্ত।
# বিশ্বাস এবং স্বচ্ছতা হলো যে কোনও সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। যে সম্পর্কে এই দুটিই রয়েছে, সেই সম্পর্ক বাইরের কোনো আঘাতে চট করে ভেঙে পড়ে না।
# সুখী দাম্পত্য এবং সুন্দর সম্পর্কের অন্যতম শর্তই হলো একে অপরকে স্বাধীনতা দেওয়া ও ছাড় দেওয়া। বিশ্বাস-স্বচ্ছতার পাশাপাশি স্বাধীনতার বিষয়টিও সুন্দর সম্পর্কে অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। এক জন যদি প্রতি মুহূর্তে অন্যের কাজে হস্তক্ষেপ করেন কিংবা প্রতি পদেই কাওকে জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে, কোথাও মানসিক নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।
# একে অন্যের সঙ্গে মানসিক বোঝাপড়াটাও খুবই জরুরি। কোনও সমস্যা হলে সঙ্গীর কাছে অপর জন মানসিক নিরাপত্তা, আশ্রয় খোঁজেন। বিপদের সময় এই ভরসার হাতটাই বুঝিয়ে দিতে পারে, সেই সম্পর্কে আসলে মানসিক নিশ্চয়তা কতোটা।
# মতের অমিল যে কোনও সম্পর্কের মধ্যেই থাকে। ঝগড়া, মান-অভিমান না থাকলে বরং বুঝতে হবে সম্পর্কে শীতলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে মতের অমিল নিয়ে প্রবল ঝগড়ার বদলে যদি দম্পতি কিংবা যুগল একে অন্যের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তাহলে বুঝতে হবে সেই সম্পর্কের বাঁধন মোটেও আলগা নয়।
# আমরা জানি দোষে-গুণেই মানুষ হয়। জীবনে চলার পথে কোনও ভুলও করে ফেলতে পারেন সঙ্গী। সেই বিষয়টি নিয়ে চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণের বদলে একে অপরকে সমর্থন করা, পাশে থাকা বুঝিয়ে দিতে পারে দু’জনের মধ্যে ভালোবাসা কতোটা।
মানুষের জীবনে চলার পথে চড়াই-উতরাই থাকবেই। সেই পথে দু’জন যদি দু’জনের হাত শক্তভাবে ধরে থাকেন আপদ-বিপদে, যদি একসঙ্গে চলার মানসিকতা রাখতে পারেন, তাহলে বুঝতে হবে সেই সম্পর্কে মানসিক নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই- আর এটিই হলো সুখি দাম্পত্য। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org