দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স ৩০ হতে না হতেই কুচকুচে কালো কেশরাশিতে পাক ধরেছে? রাসায়নিক দেওয়া রঙের বদলে খাদ্যাভ্যাসে বদল এনেও এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
বয়স ৩০ পেরোতে না পেরোতেই মাথাভরা ঢেউখেলানো কুচকুচে কালো কেশরাশিতে যেনো পাক ধরছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একমাথা কাঁচাপাকা চুল দেখলে মনটা বড়ই খারাপ হয়ে যায়। সেই পাকা চুল ঢাকার ঝক্কিও কিন্তু কম নয়। পারলারে গিয়ে চুল রং করাও, এরপর সেই রং ধরে রাখার জন্য আরও নানা নিয়ম মেনে চলো— ঝঞ্ঝাটের যেনো শেষ নেই।
অকালপক্কতা কিংবা কম বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা বর্তমান সময়ে ঘরে ঘরে। খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত নেশা করার অভ্যাস, শরীরচর্চা না করা, চুলের যত্ন না নেওয়া ইত্যাদি কারণে এমনটি হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন, কমবয়সিরা বর্তমানে সুষম খাবার খেতে অভ্যস্ত নয়। বাইরের খাবারই তাদের পছন্দের তালিকায় থাকে। যে কারণে শরীরের পুষ্টিও হচ্ছে না, চুলের পুষ্টিতেও ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। তাই চুল পড়া, চুল পেকে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। খাদ্যাভ্যাস বদলালে এই সমস্যার সমাধান দ্রুতই করতে হবে।
মেথি
প্রতিদিন সকালবেলা মেথি ভেজানো পানি খেলে শরীর ঠাণ্ডা হথাকে, এতে চুলেরও পুষ্টি হয়। পাকা চুলের সমস্যায় সমাধান মিলতে পারে এই উপায় অবলম্বন করলে।
আমন্ড
আমন্ড খাওয়া চুলের জন্যও খুবই ভালো। আমন্ডে থাকে ভিটামিন ই, যা চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। চুল পড়া, অকালপক্কতার সমস্যাও দূর করে।
গাজর
গাজরের পুষ্টিগুণও অনেক। গাজরের বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ, চুলের রুক্ষভাব দূর করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন গাজরের রস খেলে পাকা চুলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আমলকি
সাদা চুল কালো করতে আমলকির জুড়ি নেই। আমলকিতে থাকে ভিটামিন সি, যা কোলাজেনের উৎপাদনও বাড়ায়। যে কারণে চুল লম্বা হয় এবং চুলের গোড়া মজবুত করে। আমলকির রস চুলে লাগালে গোড়া থেকে চুল আরও পুষ্টি পায়। এর ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলে পাক ধরা ঠেকাতে সাহায্য করে। চুলে প্রাকৃতিক উপায়ে রং করতেও আমলকি ব্যবহার করা যেতে পারে।
বেরি জাতীয় ফল
বেরি জাতীয় ফল চুলের পুষ্টি এবং বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। এই বেরিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা পাকা চুলের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
সবুজ শাকসব্জি
ত্বক-চুল ভালো রাখতে চিকিৎসকরা বেশি করে সবুজ শাকসব্জি খেতে বলেন। শাকপাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, ফোলিক অ্যাসিড, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকে যা প্রাকৃতিকভাবে চুলের পুষ্টি জোগায়।
ছোলা
ছোলায় থাকে বি১২ এবং ফলিক অ্যাসিড। সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে ছোলা খেলে সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি চুলও ভালো থাকবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org