দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নানা কারণে লিভারের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, তবে লিভারে অতিরিক্ত পরিমাণ স্নেহপদার্থ জমে যাওয়াই এই রোগের কারণ। শুধু তাই নয়, মুখের দুর্গন্ধও হতে পারে লিভারের অসুখের ইঙ্গিত।তাহলে কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে?
সাধারণত লিভারে অতিরিক্ত পরিমাণ স্নেহপদার্থ জমে যাওয়াই এই রোগের কারণ। প্রাথমিকভাবে খুব বেশি উপসর্গ দেখা না গেলেও একটি উপসর্গ তো রয়েছেই, যা ইঙ্গিতও দিতে পারে ফ্যাটি লিভারের। এই উপসর্গটি হলো মুখের দুর্গন্ধ।
ফ্যাটি লিভার রোগের একটি অদ্ভুত লক্ষণ হলো ‘মৃতের শ্বাস’। বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ফেটর হেপাটিকাস’ নামে পরিচিত এই ‘মৃতের শ্বাস’ হলো মূলত এক প্রকার দীর্ঘস্থায়ী গন্ধ, যা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস এবং মুখের গন্ধের থেকে একেবারেই পৃথক। নির্দিষ্ট কোনও খাবার খাওয়ার পর বা সকালে নি:শ্বাসের দুর্গন্ধ আসাই কিন্তু স্বাভাবিক। তবে ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন এমন লোকদের ক্ষেত্রে এটি সারাদিন থাকে। সারাদিন নি:শ্বাসে সালফারের মতো তীব্র গন্ধ হতে পারে। এটি ফ্যাটি লিভার রোগের একটি সুস্পষ্ট লক্ষণ ও কোনও মতেই তাকে উপেক্ষা করাও উচিত নয়।
লিভারের মূল কাজ হলো শরীরের বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ এবং ভারি ধাতুকে রক্ত থেকে পরিশুদ্ধ করা। যখন যকৃৎ
সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, ঠিক তখনই এই উপাদানগুলো দেহের বিভিন্ন অঙ্গে জমা হতে থাকে। শ্বাসনালি এবং শ্বসনতন্ত্রও এর ব্যতিক্রম নয়। এই ধরনের একটি পদার্থ হলো ডাইমিথাইল সালফেট। এটি শ্বাসের মাধ্যমে নির্গত বাতাসের সঙ্গে মিশ্রিত হয় বলে এমন ঘটনা ঘটে। মুখের গন্ধের সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যায় যেমন- হলুদ রঙের প্রস্রাব, পেটে ব্যথা করা, অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে পড়া, পা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যাও কিন্তু লিভারের সমস্যার উপসর্গ। এই ধরনের কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org