দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি পা ফাটার মতো সমস্যা দেখা দেয় শীতের দিনে। তবে ভ্যাপসা গরমেও পা ফাটার সমস্যা দেখা যায় অনেকের। গোড়ালিতে ফাটা দাগের কারণে লজ্জায় পরতে হয় অনেক সময়। পা ফাটার সমস্যা একবার দেখা দিলে সহজেই সারেও না। আজ জেনে নিন, কীভাবে যত্ন নিলে খুব কম সময়ে উপকার পাবেন।
শীতে তো বটেই, মৌসুম বদলের সময়েও অনেক সময় পা ফাটে। তবে গরমেও পা ফাটার সমস্যা দেখা যায় অনেকের। পায়ের যত্নের অভাব ও কম পুষ্টির কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। আপনি হয়তো সুন্দর করে সাজগোজ করলেন, তবে পায়ে কালচে ছোপ কিংবা ফাটা গোড়ালি পুরো সাজটাই মাটি করে দিতে পারে। খালি পায়ে হাঁটতে হলে কিংবা জুতো খুলে বসার সময় লজ্জায় পড়তে হয় অনেক সময়।
এই বিষয়ে ত্বক চিকিৎসকরা বলেছেন, অনেক সময় গরমেও শুষ্কতার কারণে পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা দেখা যায়। আবার অনেক সময় রাসায়নিক দ্রব্য বা অত্যাধিক সাবান ব্যবহারের কারণেও হাত কিংবা পায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এছাড়াও কেমন জুতো পরছেন, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা মুখের কিংবা চুলের যতোটা যত্ন নিই, পায়ের যত্ন কিন্তু ততোটা নিই না। যে কারণে অবহেলিতই থেকে যায় পা। আজ জেনে নিন ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে পায়ের যত্ন নেবেন।
নিয়মিত স্ক্রাব করুন
গোড়ালি থেকে ময়লা পরিষ্কার করা খুবই জরুরি একটি কাজ। সেজন্য প্রতিদিন গোসলের সময় ‘স্ক্রাবার’ দিয়ে গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করুন। এতে গোড়ালি ফাটার সমস্যা কমে আসবে।
পেট্রোলিয়াম জেলি খুবই কার্যকরী
উষ্ণ গরম পানিতে পায়ের পাতা ভিজিয়ে রাখুন অন্তত ২০ মিনিট। এরপর পা শুকনো করে মুছে ভালো করে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন। রাতে ঘুমনোর পূর্বে পায়ে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিলে, সকালে দেখবেন পায়ের ত্বক অনেকটা নরম হয়েছে।
অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী একটি জিনিস। ফাটা গোড়ালিতে নিয়ম করে অ্যালোভেরা জেল লাগালে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পা ফাটার সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন। অ্যালোভেরা জেল ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে তারসঙ্গে মধু মিশিয়েও লাগাতে পারেন। তবে তার পূর্বে পা উষ্ণ গরম পানিতে ধুয়ে, শুকনো করে মুছে নেবেন।
কলার মাস্ক
বাড়িতে পাকা কলা, মধু এবং এক চামচ ওট্স মিশিয়ে মাস্ক বানিয়ে লাগাতে পারেন। এতে যেমন গোড়ালিটি কোমল হবে, তেমনই পায়ের ব্যথাও দূর হবে। এই মাস্ক লাগিয়ে অন্তত ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এতে পায়ে রক্ত সঞ্চালনও ভালো হবে। তবে এই মাস্ক ১৫ মিনিট রাখার পর ধুয়ে ফেলতে ভুলবেন না।
ভিনেগার
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। হাফ বালতি পানিতে দু’চামচ পরিমাণ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে, সেই বালতিতে পা ডুবিয়ে রাখুন অন্তত পক্ষে মিনিট ২০। উপকার পাবেন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে।
নারকেল তেল
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার পূর্বে ভালো করে পায়ের পাতায়, গোড়ালিতে নারকেল তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। সকালে উঠে দেখবেন পা অনেকটা নরম হয়েছে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org