দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি পৃথিবীতে যে কোনো প্রাণীরই বংশবিস্তারের প্রক্রিয়া হচ্ছে নারী-পুরুষের মিলন। তবে কিছু কিছু প্রাণী যৌন সম্পর্ক ছাড়াও প্রজননে করতে পারে। এটি সম্ভব কেবলমাত্র পার্থেনোজেনেসিস (অপুংজনি) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এইসব তথ্য গবেষকদের মাধ্যমে জানা গেছে।
মূলত পার্থেনোজেনেসিস হলো অযৌন প্রজননের একটি প্রাকৃতিক রূপ; যাতে গর্ভাধান ছাড়াই ভ্রূণের বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে। প্রাণীদের ক্ষেত্রে পার্থেনোজেনেসিস অর্থই হলো একটি অনিষিক্ত ভ্রুণকোষ থেকে ভ্রূণের বিকাশ ঘটা।
পার্থেনোজেনেসিস শব্দ সৃষ্টি হয়েছে মূলত গ্রিক শব্দ ‘পার্থেনোস’ এবং ‘জেনেসিস’ এর সমন্বয়ে। পার্থেনোস কথাটির অর্থই হলো ‘কুমারী’ ও জেনেসিস অর্থ হলো ‘সৃষ্টি’।
পার্থেনোজেনেসিস প্রাকৃতিকভাবেই কিছু উদ্ভিদ ও পোকামাকড় এটি করতেও পারে। সেইসঙ্গে কিছু উভচর, সরীসৃপ, পাখি ও মাছ। তবে অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে এটি বিরল ও সাধারণত বন্দী অবস্থাতেই দেখা যায়।
ফ্লোরিডার সারাসোটাতে মোট মেরিন ল্যাবরেটরি ও অ্যাকোয়ারিয়ামে হাঙ্গর এবং রশ্মি সংরক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন ডেমিয়ান চ্যাপম্যান। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এটি এমন পরিস্থিতিতে ঘটতে থাকে যেখানে মহিলারা পুরুষদের থেকে পৃথক হয়।
এদিকে গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ শহরের দ্য সিটি অব পোর্টসমাউথ কলেজে পুরুষ সাপের সংস্পর্শে না এসে ১৪টি বাচ্চার জন্ম দিয়েছে বিরল ব্রাজিলিয়ান রেইনবো বোয়া প্রজাতির এক সাপ! বিগত ৯ বছরেও ওই সাপটি কোনো পুরুষ সাপের সংস্পর্শে আসেনি বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের একটি অ্যাকুয়ারিয়ামে শার্লট নামে একটি স্টিংরে মাছ পার্থেনোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় গর্ভধারণ করে থাকে। অবশ্য গত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসবের পূর্বেই এটি মারা যায়। যদিও সে কখনও প্রসব করেনি ও সে কখনও গর্ভবতী ছিল কি না তাও স্পষ্ট নয়।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, পার্থেনোজেনেসিসের একটি উপায়ই হলো যখন একজন নারীর ডিম্বাণু অন্য কোষের সঙ্গে আসলে মিশে যায়। এমন একটি প্রক্রিয়া থেকে কোষ অবশিষ্ট থাকে যা একজন নারীকে ডিম তৈরি করতে দেয়। এই কোষ একটি মেরু দেহ হিসাবেও পরিচিত। যা ডিমকে জেনেটিক তথ্য দেয় তা সাধারণত শুক্রাণু হতে পাওয়া যায়। কোষটি বিভাজিত হতে শুরু করে ও এটি একটি ভ্রূণ সৃষ্টির দিকেই নিয়ে যায়।
ডেমিয়ান চ্যাপম্যান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্বাভাবিকভাবেই একটি পশুর ডিমে ভ্রূণ সৃষ্টির জন্য শুক্রাণুর প্রয়োজন পড়ে। তবে পার্থেনোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় শুক্রাণুর দরকারই পড়ে না। এছাড়াও পার্থেনোজেনেসিস থেকে আসা সন্তানদের কম জেনেটিক বৈচিত্র্যও রয়েছে, যা দ্বারা উন্নয়নমূলক সমস্যা হতে পারে বলেও তিনি মনে করেন।
তাছাড়ও বন্যের মধ্যে পার্থেনোজেনেসিস কতোটা প্রচলিত তা কিন্তু মোটেও স্পষ্ট নয়। তবে ফ্লোরিডার উপকূলীয় পানিতে একটি বিপন্ন প্রজাতি, ছোট দাঁতের করাত মাছের মধ্যেও বন্দিত্বের বাইরে এটি ঘটেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তথ্যসূত্র: এবিসিনিউজ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org