জিভে ঘা কিংবা ব্যথাও অনেক সময় বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘা হলে জিভে সাদা-লাল দাগ, ছোট ছোট এইসব ঘা হলে ফেলে রাখা ঠিক হবে না। যারা অতিরিক্ত ধূমপান করেন, তাদের নিয়মিত মুখের ভিতরটা পরীক্ষা করা উচিত। কী লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে, সেটি আজ জেনে নিন।

জিভে একটা ছোট্ট ঘা থেকেও অনেক সময় বিপদ আসতে পারে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর গবেষণা বলছে যে, জিভে ঘা, জ্বালাপোড়া, ব্যথা যদি দিনের পর দিন থেকেই যায়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কারণ হলো, এ দেশে মুখগহ্বরের ক্যান্সারে ভুগছেন অনেক মানুষ। স্বরযন্ত্র এবং খাদ্যনালিতেও ক্যান্সার হয়। অত্যাধিক গুটখা, পানমশলা বা তামাক সেবনের কারণে জিভের ক্যান্সার হতে পারে। তবে আরও বিভিন্ন কারণও রয়েছে।

দীর্ঘ সময় ধরে মুখে পান-জর্দা কিংবা পানমশলা রেখে দিলে কিংবা চিবিয়ে খেলে তার থেকেও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়াও তামাক কিংবা তামাকজাত দ্রব্য তো রয়েছেই। সিগারেট, বিড়ি, গুটখা, খৈনি, জর্দা থেকেও হতে পারে মুখের ক্যান্সার। অনেক দিনের বাসি কিংবা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে থাকলেও এই ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মুখের ক্যান্সার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে তা নির্মূল করা সম্ভব। অস্ত্রোপচার এবং রেডিওথেরাপিতে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ রোগী ভালো হয়ে যান।

Related Post

কী কী লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের কাছে যাবেন

# এই রোগের সবচেয়ে বড় লক্ষণই হলো মুখে অনেক দিন ধরে ক্ষত কিংবা ঘা। যদি কোনওভাবেই ঘা না সারে, তাহলেই সতর্ক হতে হবে।

# মুখগহ্বরে লাল বা সাদা আস্তরণ পড়লে, মাংসপিণ্ড তৈরি হলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। যদি দেখা যায় যে, ক্ষত বেড়ে চলেছে ও ক্ষতস্থান এবং তার আশপাশ শক্ত হয়ে যাচ্ছে, তাহলে দেরি করা মোটেও ঠিক হবে না।

# আবার মুখের ঘা থেকে রক্তপাত হলে, মুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে মনে হলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

# অনেক সময় দেখা যায়, জিভে ছোট ছোট ঘা হচ্ছে ও আবার দাঁতও নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। দাঁত মাজতে গেলেই রক্ত বের হচ্ছে।

# খাবার খেতে গেলেই সমস্যা, ঢোক গিলতে কষ্ট, ঘন ঘন কাশি ও কাশির সঙ্গে রক্ত বের হলেও সতর্ক হতে হবে।

এই বিষয়ে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত তামাক, তামাকজাত দ্রব্য, পান-সুপারি থাওয়ার অভ্যাস থাকলে নিয়মিত নিজের মুখ অবশ্যই পরীক্ষা রাখতে হবে। কোনও রকম লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে। প্রয়োজনে এই নেশা ছাড়তে হবে। মূলত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়। কখনও কখনও প্রয়োজন পড়ে রেডিয়োথেরাপির। নিতান্ত প্রয়োজন হলে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুলাই ১৫, ২০২৪ 2:45 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

খাওয়া কমালেই কী ইউরিক অ্যাসিড কমে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খাওয়া কমালেই যে ইউরিক অ্যাসিড কমে যাবে তা কিন্তু নয়।…

% দিন আগে

যেসব অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে আমাদের সাবধান হতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যথাযথ সোর্স যাচাই না করে ফোনে হুটহাট অ্যাপ ডাউনলোড করে…

% দিন আগে

পাঁচ নায়িকা এবং বলিউডের অন্যতম কমেডি সিনেমা ‘হাউসফুল’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের অন্যতম কমেডি সিনেমার তালিকায় প্রথম দিকেই উঠে আসে ‘হাউসফুল’-এর…

% দিন আগে

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবারও হত্যার চেষ্টা হয়েছে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের গলফ খেলার সময় হওয়া গোলাগুলির…

% দিন আগে

পানিতে নেমে শিকার! জাগুয়ারের শক্তির সামনে পাত্তাই পেলো না শক্তিশালী কুমির!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পানিতে জাগুয়ারের আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচানোর…

% দিন আগে

সুন্দর একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে