দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উসকানিমূলক ‘ভুয়া ও মিথ্যা’ তথ্যের ফাঁদে পা না দিতে পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়াও বাংলাদেশ নিয়ে উসকানিমূলক কথাবার্তা না বলতে রাজ্যের রাজনৈতিক নেতাদেরও অনুরোধ করেছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমি সব গোত্রের মানুষদের কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করছি শান্ত থাকুন ও সাম্প্রদায়িক কোনো কর্মকাণ্ডে কখনও যুক্ত হবেন না। কখনও আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যদি বাংলাদেশে আমাদের ভাইবোনরা কোনো সমস্যায় পড়েন তাহলে এটি কেন্দ্র সরকার দেখবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক কোনো কিছুই শেয়ার না করার অনুরোধ জানিয়ে মমতা বলেছেন যে, বিজেপির কিছু নেতা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে অসঙ্গত কথাবার্তা বলছেন।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আমরা কিছু ভিডিও পোস্ট দেখেছি। যেগুলো শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টও করতে পারে। দয়া করে কোনো উসকানিমূলক ভিডিও শেয়ার করবেন না। ভুয়া তথ্যের ফাঁদেও পা দেবেন না। রাজ্য প্রশাসনও সজাগ রয়েছে। শান্ত থাকুন ও শান্তি বজায় রাখুন— বলেন মমতা।
এর আগে বাংলাদেশের নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুভেচ্ছা বার্তায় মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ বাংলাদেশে যারা কার্যভার গ্রহণ করেছেন, তাদের প্রতি আমার আন্তরিক অভিনন্দন এবং শুভকামনা রইলো। আশা করি, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশের উন্নতি, শান্তি, প্রগতি এবং সর্বস্তরের মানুষের আরও ভালো হোক, এই কামনা করি। ওখানকার ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক, মহিলা হতে শুরু করে সকলের প্রতি আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো। এছাড়াও খুব শীঘ্রই সংকট কেটে শান্তি ফিরে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org