দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঋতুকালীন সময় পেটের যন্ত্রণা ভোগায় অনেক নারীকে। ঠিক তেমনি মনমেজাজেও বিভিন্ন বদল আসে। শরীরে অস্বস্তিও হয়। এই সময় কিছু যোগাসন করলে যাবতীয় সমস্যা হতে দূরে থাকতে পারবেন।
অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন ঋতুস্রাব চলাকালীন ব্যায়াম করা উচিত কি না, তা নিয়ে। এই বিষয়ে প্রশিক্ষকরা জানিয়েছেন, ঋতুস্রাবের সময় তলপেটের প্রচণ্ড যন্ত্রণায় ভোগেন অনেক নারী। আবার অনেকের ঋতুস্রাব অনিয়মিতও হয়। এই সমস্যা দূর করতে মুঠো মুঠো ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না, বরং ভরসা রাখা যেতে পারে কয়েকটি যোগাসনে। ঋতুস্রাব চলাকালীন এমন কিছু যোগাসন করা যাবে, যা পেটের যন্ত্রণা যেমন দূর করবে, তেমনি ঋতুস্রাবের সময়কার শারীরিক অস্বস্তি এবং ঘন ঘন মেজাজ বদলে যাওয়া থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে। আবার শরীরও অনেক চনমনে থাকবে। আসুন আজ জেনে নিই সেইসব যোগাসন সম্পর্কে।
ধনুরাসন
প্রথমেই ম্যাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর দুই হাঁটু ভাঁজ করে গোড়ালি দু’টো নিতম্বের উপরে আনুন। এখন দুই হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি ধরুন। এরপর ধীরে ধীরে সেই ভঙ্গিমাতেই ঊরু দু’টি উপরের দিকে তুলুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। পিছনের অংশ উঠে যাওয়ার পর, শরীরের সামনের দিকে অর্থাৎ মুখ হতে বুক অবধি উপরের দিকে তুলুন। এই সময় পেটের অংশ মাটিতে থাকবে। শরীরও টানটান রাখতে হবে। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ হতে ৩০ সেকেন্ড থাকতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে আগের ভঙ্গিতে ফিরে আসতে হবে। এই আসনে ব্যথাবেদনাও কমে যাবে। আবার পেশির জোরও বাড়বে। মনও থাকবে ভালো।
বালাসন
প্রথমে হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসুন। এরপর শরীর সামনের দিকে ঝোঁকান। বুক যেনো ঊরুতে গিয়ে ঠেকে। মাথা মেঝেতে রাখতে হবে। দুই হাত ঠিক সামনের দিকে প্রসারিত করে রাখুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। এইভাবে ২০ সেকেন্ড থাকার পর আগের অবস্থানে ফিরে আসুন। ৩ সেট করে করতে হবে এই ব্যায়ামটি। পেট এবং তলপেটের খুব ভালো ব্যায়াম হবে। তাহলে ঋতুকালীন সময় পেটের যন্ত্রণা হবে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org