দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হত্যা এবং সহিংসতা চালানোর দায়ে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের জবাবদিহির মুখোমুখি দেখতে চায় জাতিসংঘ।
২০ আগস্ট এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এমন কথা বলেছেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে স্টিফেন ডুজারিকের কাছে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন যে, ‘বাংলাদেশ এখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। কঠিন এই সময় এই দেশকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে যারা ৮১৯ জন মানুষকে হত্যা ও ২৫ হাজার মানুষকে আহত করার জন্য দায়ী তাদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব কী কিছু বলেছেন? তাদের অধিকাংশই গুলি কিংবা স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশে হতাহত হয়েছেন।’
এমন এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, আমরা এই বিশেষ সংকটের শুরু হতেই জবাবদিহির কথা বলে আসছি। সহিংসতা, প্রাণহানি ও মানবিক এবং রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহির দরকার আছে।
এই প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরুর করার পূর্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতিসংঘের মহাসচিবের আন্তোনিও গুতেরেসের দেওয়া একটি চিঠির বিষয়েও কথা বলেন স্টিফেন ডুজারিক। তিনি বলেছেন, আমি মহাসচিবের পাঠানো একটি চিঠি সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্ন পেয়েছি। আমি আপনাকে বলতে পারি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একটি অভিনন্দনপত্র দিয়েছেন গুতেরেস। বাংলাদেশে শান্তি ফেরানো ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
তিনি আরও বলেন, মহাসচিব বলেছেন যে, জাতিসংঘের প্রত্যাশা ড. ইউনূসের সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা গ্রহণ করবেন, যারমধ্যে তরুণদের পাশাপাশি নারী, সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বরও বিবেচনা করা হবে। দেশের সব নাগরিক, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ভরসাও করছেন গুতেরেস। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মঙ্গল নিশ্চিত করতে ড. ইউনূসের প্রতি জোরালো আহ্বানও জানিয়েছেন মহাসচিব, বিশেষ করে মিয়ানমারের অবনতিশীল এক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org