দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণত শরীর নিজেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি তৈরি করে নিতে পারে। তবে স্বাভাবিক সেই প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যালোকের। তবে প্রশ্ন হলো কতোক্ষণ রোদে থাকতে হবে?
হাড়, দাঁতের যত্ন বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা— দু’টিই ভালো রাখতে পারে ভিটামিন ডি। শরীরে এই ভিটামিনের জোগান দেওয়ার জন্য বাজারে হরেক রকম সাপ্লিমেন্টও পাওয়া যায়। অথচ মজার বিষয় হলো, শরীর নিজেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি তৈরি করে নিতে পারে। তবে স্বাভাবিক সেই প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যালোকের। তবে প্রশ্ন হলো কতোক্ষণ রোদে থাকতে হবে? রোদ লেগে ত্বকে কালচে দাগ হবে বলে অনেকেই সেটি এড়িয়েও চলেন। আবার, ভিটামিন ডি তৈরির আশায় অনেকেই ঠাঠা রোদে পিঠ দিয়ে বসে থাকেন। তাতে কি আদৌ কোনও ফল পান?
শুধুমাত্র হাড় বা দাঁত মজবুত রাখাই নয়, শারীরবৃত্তীয় এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো ভিটামিন ডি ছাড়া হয়ই না। এছাড়াও শরীরে নানা রকম প্রোটিন ও উৎসেচক তৈরি করতেও সাহায্য করে এই ভিটামিন ডি। এই ভিটামিনের অভাবে চুল ঝরে যেতে পারে, বেড়ে যেতে পারে ওজন। তবে ত্বকের চিকিৎসকরা বলেছেন, স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি হতে মাত্র মিনিট দশেক সময় লাগে। আর খুব বেশি হলে আধা ঘণ্টা। তবে প্রতিদিন গায়ে রোদ মাখার প্রয়োজন নেই। সপ্তাহে দু’তিন দিন ১০ মিনিট করে রোদে বসাই কিন্তু যথেষ্ট।
নেটিজেনরা বলেছেন, বেশিক্ষণ রোদে বসলেই যে, ত্বক সূর্যালোক শোষণ করতে পারবে, এমনটি কিন্তু নয়। সেটি অনেকটাই নির্ভর করে ওই ব্যক্তির গায়ের রং, বয়স ও ভৌগোলিক অবস্থানের উপর। গায়ের রং চাপা হলে রোদ শোষণ করার ক্ষমতা থাকে কম। অর্থাৎ, তাদের অন্ততপক্ষে আধা ঘণ্টা রোদে বসতে হবে। আর যারা তুলনায় ফর্সা তাদের মিনিট ১৫ এর বেশি রোদে থাকার প্রয়োজন নেই। আবার যে অঞ্চলে রোদের তেজ অনেকটা কম, সেখানে ত্বকে ভিটামিন ডি সিন্থেসিস হওয়ার জন্য স্বাভাবিকের চাইতে একটু বেশি সময় লাগবে।
দিনের ঠিক কোন সময় রোদে থাকা উচিত?
দুপুর ১২টা হতে ৩ টা পর্যন্ত যে কোনও সময় গায়ে একটু রোদ লাগালেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি হতে পারে। তবে এই সময় যেহেতু রোদের তেজ একটু বেশি থাকে তাই বেশিক্ষণ রোদে থাকার প্রয়োজন হয় না। তাছাড়াও ত্বকে সরাসরি রোদ না লাগিয়ে হালকা কিংবা সাদা রঙের পোশাক পরে রোদে থাকলেও ত্বকের ক্ষতি অনেকটাই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org