দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুলসীপাতার অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। মধুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানও।
সর্দিকাশির ঘরোয়া টোটকা হিসাবে তুলসীপাতা ও মধু খাওয়ার চল বহু পুরনো একটি জিনিস। তুলসীপাতার অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। মধুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানও। এই দুইয়ের জুটি র্যাশ, ব্রণের মতো সমস্যা নিরাময়ে ম্যাজিকের মতোই কাজ করে। তবে এখানেই কিন্তু শেষ নয়। তুলসীপাতার আরও অনেক গুণও রয়েছে। ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় শুধুমাত্র তুলসীপাতা ব্যবহারের কারণে।
মুখে তুলসীপাতা মাখলে কী উপকার পাবেন?
# তুলসীপাতার অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বাড়ন্তও তখন কমায়। ত্বকে সেবাম উৎপাদনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
# তুলসীর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতাও বজায় রাখে। যা ত্বকের জেল্লা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে।
# স্পর্শকাতর ত্বকের অস্বস্তি কমাতেও সাহায্য করে এই তুলসী। র্যাশ, লালচে ভাব, এগজ়িমা ও সোরিয়াসিসের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
তাহলে তুলসীপাতা ত্বকে কীভাবে ব্যবহার করবেন?
# একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানি ও এক মুঠো তুলসীপাতা ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে সেটি পরিষ্কার কাচের শিশিতে ভরে ফেলুন। এই তরল টোনার হিসাবে ব্যবহারও করতে পারেন। চাইলে ফ্রি’জেও রেখে দিতে পারেন। ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে তুলসীর টোনার স্প্রেও করে নিতে পারেন। প্রদাহজনিত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
# কয়েকটি তুলসীপাতা বেটে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি মুখে মেখে রাখুন মিনিট দশেক। এরপর ঈষদুষ্ণ পানিতে ধুয়ে ফেলুন। তাহলে ব্রণের উপদ্রব কমবে।
# তুলসীপাতা বেটে তার সঙ্গে পরিমাণ মতো টক দই মিশিয়ে নিতে হবে। মিনিট পনেরো এটি মুখে মেখে দিন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই প্যাক মাখলে ত্বকের বয়য়জনিত সমস্যাগুলোও তখন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org