দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গুণীজনরা বলে থাকেন, ছোট ছোট লক্ষ্য আপনাকে স্থির করতে। সেই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হোক কিংবা দৌড়ের পথ। ছোট লক্ষ্যে অভীষ্ট পূরণ হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বেশি।
হয়তো আপনি রোগা হতে চান। তবে জিমে যেতে চান না। ঠিক ভেবেছেন, নিজের চেষ্টাতেই কমিয়ে ফেলবেন ওজন। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেই চোখ কচলে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছেন বাড়ির কাছের মাঠ, পার্ক বা রাস্তায়। কেও হয়তো জগিং করছেন। কেওবা আরও এক ধাপ উপরে উঠে দৌড়াচ্ছেন। নিজের স্থির করা লক্ষ্য ছুঁতে চেষ্টার কসুর রাখছেন না কেওই। তবে, নাছোড় মেদ তাতেও ঝরছে কী? ফিটনেস বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ওজন ঝরছে না। অন্তত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিশ্রমের তুলনায় ফল পাওয়া যাচ্ছে কম। তার কারণ হলো, জগিং কিংবা দৌডাংনোর সময় কিছু ভুল থেকেই যাচ্ছে।
প্রথম ভুল হলো: লক্ষ্য আকাশ ছোঁয়া
আপনি প্রথম দিনই ঠিক করে নিলেন, ৫ কিলোমিটার দৌড়ে তবেই আপনি থামবেন। সেইখানেই হলো মুশকিল। গুণীজনরা বলে থাকেন ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করতে। সেই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই হোক কিংবা দৌড়ের পথই হোক। ছোট লক্ষ্যে অভীষ্ট পূরণ হওয়ার সম্ভাবনাও যেমন থাকে বেশি, তেমনি আকাশছোঁয়া লক্ষ্যের পিছনে দৌড়াতে গিয়ে নিজের জখম হওয়ার সম্ভাবনাও তখন কম থাকে। পেশির উপর প্রথম দিনেই অতিরিক্ত চাপ আপনাকে আহতও করতে পারে।
দ্বিতীয় ভুল হলো: বেদনায় না
বহু দিনের ‘মরচে ধরা’ পেশিকে সমূহকে সচল করার চেষ্টা করলে শুরুতেই শরীর বিদ্রোহ করতে পারে। জানান দেবে ব্যথার উপসর্গও। তবে জেদ করে যদি সেই ব্যথাবেদনার উপশম না করে তাহলে দৌড় চালিয়ে যান, তবে আরও বাড়তে পারে সমস্যা। প্রশিক্ষকরা বলেছেন, জগিং কিংবা দৌডাংনো কোনও যন্ত্রণাদায়ক শারীরিক কসরত নয়। তাই শরীর যদি অস্বাচ্ছন্দ্যের কথা জানান দেয়, তবে সেই কথা শোনাই বিধেয়।
তৃতীয় ভুল হলো: গা ঘামানোটা জরুরি
বাড়ি হতে বেরিয়েই জগিং শুরু করেছেন। আবার ভুল। জগিংয়ের পূর্বে গা-ঘামানোও জরুরি। তাই ‘ওয়ার্ম আপ’ও দরকার। ‘ওয়ার্ম আপ’ অর্থাৎ ছোট ছোট শারীরিক কসরতের মাধ্যমে পেশিকে সচল করতে হবে। স্ট্রেচিং এই বিষয়ে সাহায্য করতে পারে। তাতে পেশিতে যেমন নমনীয়তা আসবে, তেমনি কমবে আঘাত লাগার সম্ভাবনা।
চতুর্থ ভুল হলো: বিশ্রাম না নেওয়া
সবেই জগিং শুরু করেছেন। তাই চাইছেন যে, অভ্যাস তৈরি করতে। ভাবছেন, প্রতিদিন জগিং করতে যাওয়ার অভ্যাস হয়ে গেলে কেও আর আটকাতে পারবে না আপনাকে। কে বলতে পারে হয়তো ১৫ দিনেই ৫ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলবেন হয়তো! এই ধারণাও কিন্তু ভুল।
পঞ্চম ভুল হলো: শুধুই জগিং
তবে শুধু জগিংয়ে মন দিলেও মুশকিল। শারীরিক কসরতের আরও নানা মাধ্যমও রয়েছে। অ্যারোবিক্স, স্ট্রেন্থ, ট্রেনিং ইত্যাদি। জগিংয়ের পাশাপাশি সেইসব করলে, একঘেয়েমি কাটবে। আবার তখন পেশিরও বিশ্রাম হবে।
এ ছাড়াও জগিংয়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি হলো জুতো। এমন জুতো বেছে নিতে হবে, যা দৌড়ানোর উপযোগী। তাতে জগিং যেমন ভালো হবে, তেমনি পেশিতে চাপও পড়বে অনেক কম। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org