দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই এবং চিয়াং মাই প্রদেশে সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। দেশটির সরকারি তথ্যে জানা যায়, ২৭ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর এই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এই বন্যায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৩৬ জন।
চিয়াং রাই প্রদেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, যেখানে ১০ জনের মৃত্যু ও ১৩৩ জন আহত হন। মায়ে সাই, মায়ে চ্যান, মুওং ও মায়ে ফাহ লুয়াং এলাকায় ২৪ হাজারের বেশি পরিবার বন্যার কারণে বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। যদিও ৫টি স্থানীয় হাসপাতালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তবে সেগুলো আবারও স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করেছে।
থাই বিবিএস ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চিয়াং মাইয়ের মায়ে আই এবং ফাং জেলায়ও ২ হাজার ৯৭৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে মারা গেছেন ৬ জন ও ৩ জন আহত হয়েছেন। বান থা মাকেং এলাকার একটি হাসপাতাল এখনও বন্ধ রয়েছে, যে কারণে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগের।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. ওপার্ট কার্নকাওইনপং জানিয়েছেন যে, বন্যার কারণে ৪১৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে ১৬৭টি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়। যাদের মধ্যে ৫২টি চিয়াং মাই ও ১১৫টি চিয়াং রাইয়ে কাজ করছে। তারা এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৬২ জন বন্যাদুর্গতকে চিকিৎসা দিয়েছেন ও ৭৮৪ জনকে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তাও প্রদান করেছেন।
বন্যার কারণে বেশিরভাগ ভুক্তভোগী দূষিত পানির সংস্পর্শে আসার পর শ্বাসযন্ত্র, পেশী ও হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন। তবে, এ পর্যন্ত কোনো সংক্রামক রোগের খবর পাওয়া যায়নি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org