দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলি সে দেশের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়, যা নিয়ে মন্তব্য করা মোটেও সমীচীন নয়। তবে প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় এবং স্থিতিশীল করতে ভারত আন্তরিকভাবে আগ্রহী।
এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের তৃতীয় মেয়াদের ১০০ দিন পূর্তিতে দেশটির সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর এইসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলো পরস্পরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত থাকে। বাংলাদেশের সঙ্গেও আমাদের কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, যা আমরা আরও শক্তিশালী করতে চাই।’
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন সম্পর্কে জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনাবলি একান্তই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় ও এই নিয়ে ভারত কোনো মন্তব্য করা সমীচীন মনে করে না। আমরা সব সময় বাংলাদেশের বিদ্যমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছি ও তা অব্যাহত থাকবে।’
এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব পরিস্থিতি বুঝে নিয়েছে ও সম্পর্কের গুরুত্ব উপলব্ধি করে। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা খুব স্বাভাবিক, যা আমাদের সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’
জয়শঙ্কর আরও জানান, বাংলাদেশের মতো অন্যান্য প্রতিবেশী দেশেও রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে, তবে তা সমাধানও হয়েছে। ভারতের লক্ষ্যই হলো সবসময়ই সম্পর্ককে স্থিতিশীল রাখা। দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে চমৎকার বাণিজ্যিক এবং পারস্পরিক সহযোগিতা রয়েছে, ও এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখাও ভারতের অগ্রাধিকার।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো অবস্থায় রয়েছে—ব্যবসা-বাণিজ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল। এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা আগ্রহী।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org