দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাঙালি সংস্কৃতির একটা বড় অংশ জুড়েই রয়েছে নদী। সেই নদী আজ দূষণে বিপন্ন। শহর-বন্দরের পয়োবর্জ্য এবং শিল্পবর্জ্যে নদীগুলো দুর্দশার সম্মুখীন। এতে নদী তীরবর্তী লোকজনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে দূষণ থেকে নদী বাঁচাতে ‘নদী আমার মা’ শীর্ষক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে এনার্জিপ্যাক বাংলাদেশ। এই কর্মসূচির আওতায় নদী থেকে বর্জ্য উত্তোলন এবং উত্তোলন করা বর্জ্য স্থানীয় পৌরসভার সঙ্গে সমন্বয় করে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই কর্মসূচিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজারো মানুষ সংযুক্ত হয়েছেন। স্থানীয় মানুষদের সচেতন করতে নিয়মিত প্রচারণাও চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
আজ রোববার পালিত হয়েছে বিশ্ব নদী দিবস। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের চতুর্থ রোববার বিশ্ব নদী দিবস পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির বাংলাদেশের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আন্তঃসীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের অধিকার।
দিবসটি উপলক্ষে “নদী আমার মা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনার দাকোপে পশুর নদ এবং নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণ কমাতে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে৷ কর্মসূচিতে এনার্জিপ্যাক বাংলাদেশের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী হুমায়ুন রশিদ বলেন, “দখল বন্ধ ও নদী রক্ষায় আমরা সবসময় সচেষ্ট। শুধু দিবসকেন্দ্রীক না, বছরজুড়ে এমন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তিনি জানান, ভবিষ্যতে “নদী আমার মা’ কর্মসূচি আরও বেশিসংখ্যক নদী এবং এলাকায় বিস্তৃত করা হবে। নদী থেকে বর্জ্য সংগ্রহে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করা হবে”।
এনার্জিপ্যাক বাংলাদেশ তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) আওতায় নদী এবং নদীতীরবর্তী অবকাঠামো ও গ্রামকে সুরক্ষিত রাখতে বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নদীকে বিলুপ্তি থেকে বাঁচাতে এই বিশেষ সিএসআর কর্মসূচি নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
“নদী আমার মা’ কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল খুলনার দাকোপে অবস্থিত জি-গ্যাস এলপিজি প্ল্যান্ট এলাকা থেকে। নদী তীরবর্তী ৫ হাজার মিটার এলাকায় ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ মেট্রিক টনেরও বেশি বর্জ্য উত্তোলন ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও জি-গ্যাস স্যাটেলাইট প্ল্যান্ট রূপগঞ্জে প্রতি মাসের প্রথম শনিবার নদী পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এখান থেকে এ পর্যন্ত ৫ টন বর্জ্য উত্তোলন ও নিষ্কাশন করা হয়েছে। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org