দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের বিমান হামলায় লেবাননের রাজধানী বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে অন্তত ৬ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ভোরের দিকে এই হামলা চালানো হয় বৈরুতের বাচুরা এলাকায়।
বৈরুতের বাচুরা এলাকাটি লেবাননের পার্লামেন্ট ভবনের খুব কাছাকাছি ছিল, যা ইসরায়েলের পক্ষ হতে লেবাননের সরকারের নিকটতম স্থানে চালানো প্রথম হামলা।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, বৈরুতের পাশাপাশি দক্ষিণের দাহিয়া এলাকায় আরও ৩টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, যেখানে সম্প্রতি হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হয়েছেন। দাহিয়া এলাকায় এই সপ্তাহে ১২টিরও বেশি ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার ইরান থেকে ইসরায়েলে ১৮০টি’র বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হলে লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হিজবুল্লাহর সংঘর্ষ শুরু হয়। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, লেবাননে ঢুকে তারা হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করেই এইসব হামলা চালাচ্ছে। বুধবারের সংঘর্ষে ৮ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে, যা গত এক বছরে লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় একটি ক্ষতি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, আমরা ইরানের নেতৃত্বাধীন অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে এক কঠিন যুদ্ধের মুখোমুখি। তবে আমরা একসঙ্গে রয়েছি, ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা জয়ী হবো।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় লেবাননের দক্ষিণ এবং মধ্যাঞ্চলে কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত হন। লেবাননের সরকার জানিয়েছে, প্রায় ১.২ মিলিয়ন লেবাননি নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক ডজন শহর হতে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং উত্তরের আওয়ালী নদীর কাছাকাছি আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ইরান জানিয়েছে যে, ইসরায়েলের হামলায় তাদের নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, তবে নতুন কোন হামলা না হলে তারা প্রতিশোধও নেবে না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানকে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলাকে তিনি সমর্থন করবেন না ও ইসরায়েলকে আঞ্চলিক উত্তেজনা নিরসনে ‘পরিমিত’ পদক্ষেপও নিতে বলেছেন।
এই সংঘাতের কারণে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে, যা তেলের উৎপাদন এবং বিশ্ব অর্থনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org