দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি প্রশ্ন হলো আপনি কী নিয়মিত অমলেট খান? তবে আপনি জানেন কী এই খাবার শরীরের উপকার করে নাকি ক্ষতি করে? তার উত্তর দিয়েছেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ।
অনেকেই ডিমের অমলেট খেতে খুব ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন এই ভাজা খাবার খেয়ে করেন রসনাতৃপ্তি। নইলে তাদের মনে কিন্তু উঁকি দেয় একরাশ কালো ধোঁয়া। সব থেকেও কিছু একটা না থাকার বেদনাও ঘিরে ধরে।
তবে সাধারণ মানুষের একাংশে এহেন অমলেট প্রীতিকে মোটেও ভালো চোখে দেখেন না কিছু সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ। তাদের ভাষায়, নিয়মিত অমলেট খেলে শরীরের হাল বিগড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা বেশি। তবে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞের কথা শুনেই অমলেটের সঙ্গে সম্পর্কে চ্ছেদ করবেন না। ইতিপূর্বে একবার কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদারের পরামর্শ আজ জেনে নিন।
সেরার সেরা ডিম
একটা পুরো ডিমে প্রায় ৬ গ্রামের মতো প্রোটিন থাকে। এই খাবারে উপস্থিত প্রোটিন খুব সহজেই গ্রহণ করে শরীর। শুধু তাই নয়, এতে রয়েছে ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, সেলেনিয়াম, ভিটামিন এ, কোলিন, আয়রণ, ফোলেট হতে শুরু করে একাধিক জরুরি ভিটামিন এবং খনিজ। তাই পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে চাইলেই নিয়মিত ডিম খেতে হবে। তাতেই শরীর এবং স্বাস্থ্যের হালও ফেরাতে পারবেন।
অমলেট খাওয়া উপকার নাকি ক্ষতিকর?
এই সম্পর্কে মীনাক্ষী মজুমদার বলেন, ‘অমলেট খাওয়া কোনওভাবেই ক্ষতিকর কিছু নয়। যে কোনও সুস্থ মানুষ এই খাবার খেতেই পারেন। তাতেই উপকার পাবেন। তবে একটা কথা মানতে হবে, ডিম ভেজে খেলে তার পুষ্টিগুণ কিছুটা হলেও কমে যাবে। উল্টো তার ক্যালোরি ভ্যালুও কিছুটা বাড়ে। তাই ডিম ভাজা প্রতিদিনই না খাওয়াই মঙ্গল। তার বদলে ভরসা রাখতে পারেন ডিম সিদ্ধের উপরে। তাতেই এই প্রাণিজ খাবারের সমস্ত পুষ্টিগুণ পেতে পারেন।’
মিলিয়ে মিশিয়ে খান
যে কোনও সুস্থ-সবল মানুষ, যার ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, বিপি, হার্টের কোনো অসুখ নেই, তারা অনায়াসে সপ্তাহে ৩ দিন অমলেট খেতেই পারেন। বাকি ৪ দিন ডিম সিদ্ধ খেতে পারেন। অমলেট করার সময় তাতে কিছুটা টোম্যাটো, পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম মিশিয়েও দিতে পারেন। এই কাজটি করলে কিছুটা উপকার পাবেন। এর পাশাপাশি ডিম কখনওই বেশি তেলে ভেজে না খাওয়ায় ভালো। বরং অল্প তেলে হালকা ভেজে খেতে পারেন।
কারা খাবেন না অমলেট?
যাদের ওজন স্বাভাবিকের থেকেও বেশি, তারা অমলেট খেলেই ওজন বাড়তে পারে। তাই আপনাদের অবশ্যই এই খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হাই বিপি কিংবা হার্টের অসুখ থাকলেও অমলেট খাওয়া মোটেও চলবে না। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org