দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় সময় আপনার প্রেশার হাই? এই সমস্যাকে যেনো বশেই আনতে পারছেন না? তাহলে নিয়মিত খেতে হবে লাউ। তাতেই এই রোগকে কন্ট্রোলে রাখতে পারবেন। পাশাপাশি পাবেন একাধিক চমকপ্রদ উপকার।
আমরা সবাই জানি হাই ব্লাড প্রেশারের মতো একটি জটিল অসুখকে বশে রাখতে হবে। কারণ হলো, এই রোগ হলো এক নীরব ঘাতক। আপনার অজান্তেই এই অসুখটি কিডনি, চোখ, হার্টসহ দেহের একাধিক অঙ্গের বড়সড় ক্ষতি করেও দিতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা এই রোগে ভুক্তভোগীদের নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পরামর্শও দেন। সেইসঙ্গে এড়িয়ে চলতে বলেন বাইরের ফাস্টফুড। এমনকী খেতে বারণ করেন কাঁচা লবণ। তার বদলে লাউয়ের মতো একটি উপকারী সবজি খাওয়ার পরামর্শও দেন।
হয়তো আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, ঠিক কীভাবে প্রেশারকে বশে রাখে এই লাউ?
ব্লাড প্রেশারের ওষুধ
এই সবজিটিতে সোডিয়াম প্রায় নেই বললেই চলে। যে কারণে লাউ খেলে প্রেশারও বাড়ে না। শুধু তা-ই নয়, এতে রয়েছে পটাশিয়ামেরও ভাণ্ডার। এই খনিজ রক্তনালীকে শান্ত করতেও সাহায্য করে। যে কারণে কমে প্রেশার। শুধু তা-ই নয়, পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্যও ফেরায় এই সবজিটি। সেই সুবাদে অনায়াসে বিপি-কে কন্ট্রোলে রাখা সম্ভব। তাই তো বিশেষজ্ঞরা এই রোগে ভুক্তভোগীদের নিয়মিত এই সবজিটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এই সবজি কীভাবে খাবেন?
এই সবজি খেয়ে উপকার পেতে হলে তা খুব করে ভেজে খেলেই চলবে না। এর পরিবর্তে অল্প তেল, মশলা সহযোগে লাউয়ের পদ রেঁধে তারপর খেতে হবে। অবশ্যই রান্নায় লবণ কম দিতে হবে। এই নিয়মটি মেনে চললে অনায়াসে ব্লাড প্রেশারকে বশে রাখতে পারবেন আপনি।
লিভারের জন্যও সেরা
এই সবজিতে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ফেনোলিক কম্পাউন্ড ও একাধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে। এই সমস্ত উপাদান লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও কমায়। যে কারণে এই অঙ্গটি বিভিন্ন ক্রনিক রোগ হতে দূরে থাকে। শুধু তা-ই নয়, এই সব উপাদানের গুণে লিভারে উপস্থিত টক্সিনও দ্রুত গতিতে শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসে। তাই এই অঙ্গের হাল ফেরাতে চাইলে নিয়মিত লাউ খেতে হবে।
পেটের সমস্যা নেবে ছুটি
অনেকেই পেটের অসুখে ভোগেন নিত্যদিন। তবে এরপরও এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পান না। তবে ভালো খবর হলো, আপনি যদি নিয়মিত লাউ খান, তাহলে অনায়াসে পেটের সমস্যাকে বশে রাখতে পারবেন।
কমবে ওজন
যারা ঝটপট ওজন কমিয়ে ফেলতে চান তারা ভরসা রাখতে পারেন লাউয়ের উপর। কারণ হলো, এর ক্যালোরি ভ্যালু খুব কম। সেইসঙ্গে এতে ফাইবার ও পানি রয়েছে। তাই এই সবজি খাওয়ার পর পেট ভর্তি থাকে। আজেবাজে খাবার খাওয়ার ইচ্ছেও চলে যায়। যে কারণে কমে ওজন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org