দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিউমোনিয়া হতে সাধারণ সর্দি, শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন রোগের জীবাণু কম তাপমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। যে কারণে সংক্রমণ আরও বাড়ে। সেই সংক্রমণ থেকেই হতে পারে শ্বাসকষ্টও।
একেবারেই নিকটে এসে গেছে শীত। তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতাও কমে আসবে। অনেকের এই আবহাওয়ায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে। বিশেষ করে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থাকলে বা হাঁপানি থাকলে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। এই সময় বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণও বাড়ে। সেইসঙ্গে নিউমোনিয়া থেকে সাধারণ সর্দি, শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন রোগের জীবাণুও কম তাপমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। যে কারণে সংক্রমণ আরও বাড়ে। সেই সংক্রমণ থেকে হতে পারে শ্বাসকষ্টও।
হাঁপানির রোগীরা কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে?
# কোভিড চলে যাওয়ার পর মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় সবাই। এই মাস্ক ধোঁয়াধুলো ও বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণ থেকে বাঁচায়। তাই বাড়ির বাইরে বের হলে মাস্ক অতি অবশ্যই পরবেন।
# বাইরে থেকে এসে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। ব্যাগে স্যানিটাইজ়ার রাখলে খুবই ভালো হয়।
# প্রতিদিন খাওয়া এমন হতে হবে, যাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি আরও বাড়ে। ফুসফুসের জোরও বাড়াতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে প্রোটিন। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বাদাম, শাক ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে, যাতে করে শরীর আর্দ্র থাকে।
# যারা বিশেষ করে যেসব বয়স্ক মানুষ হাঁপানিতে ভুগছেন, তাদের প্রত্যেকের উচিত বাধ্যতামূলকভাবে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা গ্রহণ করা। সঙ্গে ইনহেলারও অবশ্যই রাখতে হবে।
# ঘন ঘন দুধ চা কিংবা কফি খাবেন না। বাইরে বের হলে নরম পানীয়, ঠাণ্ডা শরবত কিংবা আইসক্রিম ভুলেও খাবেন না। যদি শ্বাসকষ্ট হয় কিংবা হাঁপানির টান ওঠে, তাহলে ঈষদুষ্ণ পানিতে একচিমটে লবণ ফেলে খেতে পারেন। তাতেও আপনি আরাম পাবেন।
# আর আমলকি খাওয়া খুবই ভালো। আমলকির রসে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। আমলকি খেলে ফুসফুস থেকে দূষিত পদার্থ কিংবা টক্সিন বেরিয়ে যায়। প্রতিদিন অল্প করে তুলসির রস খেলে সর্দি-কাশি, কফও জমতে পারবে না। ইচ্ছে করলে তুলসি পাতা ফুটিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন।
# শুধু খাওয়া-দাওয়ায় নয়, শ্বাসনালি এবং ফুসফুস ভালো রাখতে নিয়ম করে ব্রিদিং এক্সারসাইজ় করুন। অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে অনুলোম-বিলোম, কপালভাতিও করতে পারেন। ফুসফুস ভালো রাখতে বাড়িতে বসে কিছু যোগাসনও করতে পারেন। তাহলে শুধু শীতেই নয়, সারা বছর হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org