দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভাত খাওয়ার সময় প্রচণ্ড ঝাল লাগলে বা বিষম খেলে, পানি খাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায়ই থাকে না। তবে কয়েকটি খাবার খাওয়ার মধ্যে বা পরে পানি খাওয়া একেবারেই নিষেধ। তাতে হিতে বিপরীতও হতে পারে।
খেতে বসার আধা ঘণ্টা আগে অনেকেরই পানি খেয়ে নেওয়ার অভ্যাস রয়েছে। চিকিৎসকরা মনে করেন, এই অভ্যাস সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই বিষয়টি বিপরীতও। খাবার খাওয়ার মধ্যে বা পর ঢক ঢক করে খানিকটা পানি খেয়ে নেন। এতে হজমের গোলমাল হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। এতে করে খাবার ঠিকঠাক হজম হতে পারে না। সেই কারণে পুষ্টিবিদরা খাওয়ার মধ্যে পানি খেতে বারণ করেন। তবে প্রচণ্ড ঝাল লাগলে বা বিষম খেলে, পানি খাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায়ও থাকে না। তবে কয়েকটি খাবার খাওয়ার পর অবশ্যই পানি খাওয়া একেবারেই নিষেধ। তাতে হিতে বিপরীতও হতে পারে।
# যেসব ফলগুলোতে পানির পরিমাণ বেশি, তা খাওয়ার পর আলাদা করে পানি না খাওয়াই ভালো। লেবু, শসা, তরমুজের মতো ফল ঠিকভাবে খাওয়া গেলে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে এইসব ফল খাওয়ার পরই পানি খেলে হজমের গোলমাল হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যেতে পারে।
# তেল-মশলা, ভাজাভুজি দেওয়া কোনও রান্না খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই পানি না খাওয়াই ভালো। কারণ হলো, এই দুই ধরনের খাবার হজম করা কঠিন। সঙ্গে সঙ্গেই পানি যদি শরীরে যায় তবে খাবার হজম হতে সময় অনেক বেশি নেবে। তাই ভাজা কোনও খাবার খাওয়ার অন্ততপক্ষে আধা ঘণ্টা পর পানি খেতে হবে।
# আইসক্রিম খাওয়ার পরও সঙ্গে সঙ্গে পানি খেতে বারণ করে থাকেন চিকিৎসকরা। এর কারণ হলো, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা আইসক্রিম ও সাধারণ তাপমাত্রার পানি একসঙ্গে প্রবেশ করলে তা গলার ক্ষতিও করতে পারে। ঠাণ্ডা-গরম লেগে গলা ব্যথা শুরু হতে পারে সঙ্গে সঙ্গেই।
# চিনেবাদাম ও তিল খাওয়ার পরেও পানি খাওয়া বিশেষ ভালো নয়। এই দু’টি খাবারই শুকনো। গলা দিয়ে নামতে সময়ও লাগে। সঙ্গে সঙ্গে পানি খেলে কাশিও হতে পারে। তাই এই দু’টি উপকরণ দিয়ে তৈরি কোনও খাবার খেয়ে পানি না খাওয়াই শ্রেয়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org