দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাশিয়ার ভূখণ্ডে দূরপাল্লার ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেন এই প্রথমবারের মতো হামলা করলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একদিন পরই এই হামলা চালালো ইউক্রেন।
মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমা তথা ন্যাটো জোটের দ্বিতীয় কোনো দেশের অস্ত্র দিয়ে এই হামলা। আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
রুশ সামরিক ব্লগারদের বুধবার টেলিগ্রামে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায় যে, ইউক্রেনের সীমান্তে অবস্থিত কুরস্ক অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ব্যাপক শব্দ হয়।
এতে কমপক্ষে ১৪টি বিশাল বিস্ফোরণও শোনা যায়, যার বেশিরভাগই ক্ষেপণাস্ত্রের মতো এবং তীক্ষ্ণ হুইসেলের মতো।
রুশপন্থি টেলিগ্রাম চ্যানেল টু মেজর্সের দাবি, ইউক্রেন রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে কুরস্ক অঞ্চলে ১২টি স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। তারা ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষের ছবিও শেয়ার করেছে, যেখানে ‘স্টর্ম শ্যাডো’ লেখা স্পষ্ট দেখা যায়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের দফতর হতে অবশ্য এখনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কবে এই ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভকে সরবরাহ করা হয় কিংবা ব্রিটিশ সরকারের এই হামলার পেছনে অনুমতি রয়েছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।
মনে করা হচ্ছে যে, বিদায়ী বাইডেন প্রশাসনের ক্ষমতা হস্তান্তরের পূর্বে আরাও জটিল পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ।
কারণ হলো ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই ইউক্রেন যুদ্ধের লাগাম টেনে ধরার পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রয়োজন হলে রাশিয়ার স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই দ্রুত যুদ্ধ শেষও করতে চায় রিপাবলিকান শিবির।
ইতিপূর্বে গত মঙ্গলবার, ইউক্রেন যুদ্ধের ১ হাজারতম দিনে বাইডেনের বিদায়ী প্রশাসনের কাছ থেকে সদ্য মঞ্জুর করা সুবিধা নিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে ট্যাংকবিরোধী মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায় ইউক্রেন।
মস্কো বলেছে, সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ওয়াশিংটন বর্তমানে ইউক্রেনকে সরবরাহ করেছে, এটি একটি স্পষ্ট সংকেত যা পশ্চিমারা সংঘাত আরও বাড়াতে চায়।
মঙ্গলবার, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রচলিত হামলার বিস্তৃত পরিসরের প্রতিক্রিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিও দিয়েছেন।
রাশিয়া বারবার বলে আসছে যে, ওয়াশিংটন যদি ইউক্রেনকে রাশিয়ার গভীরে মার্কিন, ব্রিটিশ ও ফরাসি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার অনুমতি দেয় তাহলে মস্কো সেই ন্যাটো সদস্যদের ইউক্রেনের যুদ্ধে সরাসরি জড়িত বলেই বিবেচনা করবে। সেইক্ষেত্রে রাশিয়া আত্মরক্ষায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারেও পিছপা হবে না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org