দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি কী হাই কোলেস্টেরলে ভুগছেন? সেই ক্ষেত্রে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি আদার রসে চুমুক দিতে পারেন। এতেই সমস্যাকে বশে রাখতে পারবেন।
আমরা জানি হাই কোলেস্টেরল একটি জটিল অসুখ। যেভাবেই হোক এই রোগকে কন্ট্রোলে রাখতে হবে। অন্যথায় রক্তনালীর অন্দরে জমবে এই উপাদানটি। যে কারণে স্বাভাবিক রক্ত চলাচলও ব্যাহত হবে। সে কারণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে শুরু করে একাধিক জটিল রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও বাড়বে। তাই যেভাবেই হোক না কেনো, কোলেস্টেরল কমাতেই হবে। সেই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে বাইরের ফাস্ট ফুড খাওয়া ছাড়তে হবে। এর পরিবর্তে বাড়ির খাবার খেতে হবে। সেইসঙ্গে নিয়মিত খাওয়া শুরু করুন এই আদার জুস। এতে উপস্থিত একাধিক উপকারী উপাদানের গুণে অনায়াসে কোলেস্টেরল বশে রাখতে সক্ষম। সেইসঙ্গে পাবেন একাধিক উপকারও।
তাই সময় নষ্ট না করে কীভাবে আদার জুস খেলে এই উপকার পেতে পারেন, এই বিষয়টি আজ জেনে নিন।
কোলেস্টেরল কমানোর সেরা অস্ত্র
রক্তনালীর অন্দরে আমাদের কোলেস্টেরল প্লাক হিসাবে জমা হয়। যে কারণে স্বাভাবিক রক্তচলাচলও হতে পারে না। সে কারণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে শুরু করে একাধিক জটিল রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও থাকে। তবে ভালো একটি খবর হলো, আপনি যদি নিয়মিতভাবে আদার জুস খান, তাহলে প্লাক জমা হতেও পারে না। উল্টো এতে উপস্থিত একাধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল লেভেল কমাতেও সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইডসকে বশে আনার কাজেও সেরার সেরা অস্ত্র হলো এই আদার জুস। তাই নিয়মিত এই পানীয়ে চুমুক দিলে বহুবিধ উপকার পাবেন।
খাবেন যেভাবে
একটা ২-৩ ইঞ্চির আদা ভালো করে ধুয়ে নন। এরপর পিষে জুস বের করে ঝটপট তাতে চুমুক দিন। এভাবে আদার জুস করে খেলেই উপকার পাবেন অনেক বেশি। তবে অনেকেই আদার ঝাঁঝ সহ্য করতেও পারেন না। আপনিও যদি সেই দলের মানুষ হন, সেই ক্ষেত্রে জুসের মধ্যে লেবুর রস মিশিয়েও নিতে পারেন। তাতে এই জুসের স্বাদ কিছুটা হলেও বদলে যেতে পারে। শুধু কোলেস্টেরল কমানোই নয়, এর পাশাপাশি আরও একাধিক উপকার করে এই আদার জুস।
প্রেশার কমবে
হাই প্রেশারকে বলা হয় সাইলেন্ট কিলার। এই রোগকে বশে না রাখলে কিডনি, চোখ, হার্টসহ দেহের একাধিক অঙ্গের বারোটা বেজে যেতে পারে। তাই চেষ্টা করুন যেভাবেই হোক, ব্লাড প্রেশারকে বশে রাখার জন্য। সেই কাজে আপনার হাতের ৫ হতে পারে আদার জুস। এতে উপস্থিত পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম ব্লাড প্রেশার কমায়। এমনকি এই পানীয়তে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুণে রক্তনালীর প্রদাহ কমে। তাই দেরি না করে ঝটপট এই পানীয় সেবন করুন।
ইমিউনিটি বাড়বে
রোগ প্রতিরোধও ক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাহলেই আশপাশে উপস্থিত একাধিক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার হতে দূরত্ব বজায় রাখতে পারবেন। ভালো খবর হলো, নিয়মিত আদার রস খেলে অনায়াসে ইমিউনিটিও বাড়াতে পারবেন। এটিতে উপস্থিত ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি-এর গুণেই এই উপকার পাওয়া যাবে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়মিত এই জুসটিতে চুমুক দিতে ভুলবেন না!
গ্যাস-অ্যাসিডিটির দাওয়াই
আপনার কী মাঝে মধ্যেই গ্যাস-অ্যাসিডিটি হয়? সেই ক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন অত্যন্ত উপকারী আদা রসের উপর। এটিতে উপস্থিত জিঞ্জেরল নামক উপাদানটিই অন্ত্রের হাল ফেরাতে সাহায্য করবে। যে কারণে গ্যাস-অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা হতে রক্ষা পাওয়া যায়। তাই ঝটপট খাওয়া শুরু করে দিতে পারেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org