দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঊরুতে মেদ জমলে নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই ফল পাওয়া যাবে। এই মৌসুমে শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন করতে পারেন, সেটি আজ জেনে নিন।
শরীর ফিট রাখতে নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। তবে কাজের ব্যস্ততা এবং সংসারের দায়িত্ব সামলে নিয়ে জিমে যাওয়ার সময় পান না অনেকেই। যে কারণে নানা রকম শারীরিক জটিলতাও বাড়ছে। যে কারণে ঘন ঘন চিকিৎসকের কাছেও ছুটতে হচ্ছে সমস্যা নিয়ে। ইচ্ছে থাকলে বাড়িতেই আধা ঘণ্টা সময় বের করে যোগাসন কিংবা ব্যায়াম অভ্যাস করা যায়। কেবলমাত্র রোগা হওয়ার জন্যই নয়, নানা রকম রোগবালাই ঠেকিয়ে রাখতেও নিয়ম করে যোগাসন করা দরকার। অবশ্য সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই পাওয়া যাবে ফল। শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসনগুলো অভ্যাস করতে পারেন। তবে আজকের ব্যায়াম শলভাসন।
মূলত সংস্কৃত শব্দ ‘শলভ’ থেকেই শলভাসন কথাটি এসেছে। এর অর্থ হলো ‘পঙ্গপাল’। এদের অনেকটা গঙ্গাফড়িংয়ের মতোই দেখতে। আসনটির অন্তিম পর্যায়ের ভঙ্গিমাটি করার সময় মাথা নিচু করে পা উপরের দিকে তুলতে হয়। এই ভঙ্গিমা দেখেই পঙ্গপালের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
কীভাবে করবেন এটি?
প্রথমে উপুড় হয়ে ম্যাটের উপর শুয়ে পা দু’টি একসঙ্গে টান টান করে রাখতে হবে। দুই হাত রাখুন ঠিক দুই ঊরুর নীচে, হাতের চেটো উপরের দিকেই ফিরিয়ে রাখুন। এটি আসন শুরুর ভঙ্গি।
# এরপর ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে বাঁ পা উপরে তুলুন। হাঁটু যেনো ভাঁজ হয়ে না যায়, সে দিকেও খেয়াল রাখবেন এবং ডান পা একেবারে টান টান থাকবে।
# এই অবস্থানে থাকুন অন্তত ৫ সেকেন্ড। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যেনো শরীরে কোনো বাড়তি চাপ না পড়ে। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পা নীচের দিকে নামান। নিতম্ব যেনো একই জায়গায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
# একই পদ্ধতিতে শ্বাস নিতে নিতে দুই পা উপরের দিকে তুলতে হবে। ৫ সেকেন্ড এই অবস্থানে থেকে তারপর শুরুর ভঙ্গিতে ফিরে আসুন। এভাবে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হবে। এইভাবে ৩ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
# আসনটি অভ্যাস করার সময় হাতের আঙুল এবং পায়ের বুড়ো আঙুল পর্যন্ত স্ট্রেচ কিংবা টান অনুভব করবেন।
# প্রতিটি রাউন্ড অভ্যাসের পর উপুড় হয়ে শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে।
# শুরুতে পা বেশি উঁচুতে না উঠলেও কয়েক দিন অভ্যাসের করলে বেশি উচ্চতায় তুলতে পারবেন।
সতর্কতা:
স্লিপ ডিস্ক বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেলে এই আসনটি আর করবেন না। হার্টের অসুখ থাকলে আসন করার সময় বেশি চাপ নেওয়া যাবে না। যেটুকু শরীরে সয়, ঠিক সেভাবেই আসন অভ্যাস করবেন।
আসনটি কী উপকার করবে?
এই শলভাসন অভ্যাস করলে কোমর এবং নিতম্বের পেশি ও স্নায়ু উজ্জীবিত হয়। বিশেষ করে প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ুর কার্যকারিতাও বাড়ে। কোমরের দিকের পেশি এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়ে বলে পিঠ এবং কোমরের আড়ষ্ট ভাব চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের নমনীয়তা ফিরে আসে। কোমর এবং পিঠের অল্প ব্যথা কমাতে এই আসনটি খুবই উপযোগী। প্রতিদিনের অভ্যাসে সায়াটিকাসহ পিঠের নীচের দিকের যন্ত্রণা এবং মৃদু স্লিপ ডিস্কের সমস্যাও দূর হয়। এই আসনটি নিয়মিত অভ্যাস করলে শ্রোণিদেশের আড়ষ্ট ভাবও দূর হয়। শলভাসন অভ্যাস করলে তলপেটের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং লিভারের কার্যকারিতাও বাড়ে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও চলে যায়, আবার হজমশক্তি বাড়ে। পা এবং ঊরুর মেদ ঝরাতেও এই আসনটি উপকারী। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org