দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ওয়াটার রিটেনশন অন্য কোনও রোগের লক্ষণও হতে পারে। কিডনি, লিভার সঠিকভাবে কাজ না করলেও অনেক সময় পায়ের পাতায় পানি জমে পা ফুলে যেতে পারে। এই অবস্থায় কি করবেন? প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন।
আমাদের দেহের ওজন চড়চড় করে বেড়ে যাওয়ার কারণ শুধুই মেদ নয়। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, শরীরে অতিরিক্ত তরল কিংবা ফ্লুইড জমার কারণেও অনেক সময় দেহের ওজন বেড়ে যায়। মুখ, চোখের কোল, হাত-পা, পায়ের পাতা ফুলতে শুরু করে দেয়। চিকিৎসা পরিভাষায় এটিকে ইডিমা বা ওয়াটার রিটেনশন বলা হয়। এই ওয়াটার রিটেনশন অন্য কোনও রোগের লক্ষণও হতে পারে। কিডনি, লিভার সঠিকভাবে কাজ না করলেও এই ধরনের সমস্যা অনেক সময় দেখা দিতে পারে। তবে আরও কয়েকটি কারণে শরীরের প্রকোষ্ঠে কিংবা আনাচকানাচে পানি জমতে পারে। আজ জেনে নিন, সেই বিষয়টি।
খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাচ্ছেন?
রান্নায় লবণ যেমনই হোক না কেনো, প্রতি বার খাওয়ার পাতে লবণ থাকা চাই-ই। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি লবণ খাওয়ার অভ্যাস শরীরে ফ্লুইড কিংবা তরলের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তোলে। যে কারণে শরীরের আনাচে-কানাচে পানি জমে। পায়ের পাতায় পানি জমে পা ফুলে যায়।
ভিটামিন বি৬-এর অভাব হচ্ছে না তো?
অনেকেই হয়তো জানেন না যে, শরীরে জমা অতিরিক্ত ফ্লুইড, সোডিয়াম শরীর হতে বের করে দিতে সাহায্য করে ভিটামিন বি৬। শরীরে এই ভিটামিনের অভাব হলেই দূষিত তরল জমতে শুরু করে। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে এমন খাবার রাখার চেষ্টা করতে হবে, যেগুলো ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ।
নিয়মিত শরীরচর্চা
আমাদের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য শরীরচর্চা করা একান্ত প্রয়োজন। রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখা থেকে পেশি সচল রাখা বা লিম্ফ্যাটিক ড্রেনেজ— সবেতেই সাহায্য করে শরীরচর্চা। যে কারণে শরীরে ফ্লুইডও জমতে পারে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org