দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জোয়ান হলো অত্যন্ত উপকারী একটি ভেষজ। এটিতে রয়েছে একাধিক জরুরি প্ল্যান্ট কম্পাউন্ড। যে কারণে এই ভেষজ নিয়মিত সেবন করলে শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল ফিরবে। আর দূরে থাকবে একাধিক জটিল রোগ।
কিন্তু আরও বেশি উপকার পেতে চাইলে জোয়ান সেবন করার পাশাপাশি এই পানীয় পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন। তাতে লাভ পাওয়া যাবে বেশি। তাই কথা না বাড়িয়ে ঝটপট এই পানীয় নিয়মিত পান করার উপকার সম্পর্কে আজ জেনে নিন।
কোলেস্টেরল কমবে
আপনি কী হাই কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন? সেই ক্ষেত্রে প্রতিদিনের ডায়েট থেকে অবশ্যই বাদ দিতে হবে ফাস্ট ফুড। এর পাশাপাশি এড়িয়ে চলতে হবে রেড মিট, ঘি এবং মাখন জাতীয় খাবার থেকে। এর পরিবর্তে প্রতি রাতে শোয়ার পূর্বে খান জোয়ান মেশানো পানি। এই পানীয়তে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে। যে কারণে সুস্থ থাকে হৃৎপিণ্ড। এড়িয়ে চলা যাবে একাধিক জটিল রোগ থেকে।
পেটের সমস্যা
গ্যাস কিংবা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুক্তভোগীরা নিয়মিত খেতে পারেন জোয়ান পানি। আসলে এই পানীয়তে উপস্থিত একাধিক উপাদান পাকস্থলীর হাল ফেরাতে সাহায্য করে। যে কারণে খাবার দ্রুত হজম হয়। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত এই পানীয় খেলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ে। সেই সুবাদে বিরক্ত করতে পারে না গ্যাস কিংবা অ্যাসিডিটি। তাই প্রতিদিনের নাইট রুটিনে অবশ্যই জোয়ান পানিকে জায়গা করে দিতে হবে। তাতে সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
ফুসফুসের সমস্যা
অনেকের শীত পড়তেই ফুসফুস বিপদে পড়ছে। তাদের শুরু হয়ে গেছে শ্বাসকষ্ট। তাই এই সময় অ্যাজ়মা এবং সিওপিডি রোগীদের সাবধান থাকতে হবে। আপনারা প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে খেয়ে নিন জোয়ান পানি। এই পানীয়তে প্রদাহ কমাতে পারে। সেইসঙ্গে ফুসফুস হতে ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয়। যে কারণে একাধিক জটিল রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলা সম্ভব।
সুগারেও ভালো
ডায়াবিটিসকে বশে রাখা ভীষণই জরুরি। অন্যথায় শরীর ও স্বাস্থ্যের হাল বিগড়ে যায়। কিডনি, স্নায়ু, চোখ থেকে শুরু করে একাধিক অঙ্গের হতে পারে ভয়াবহ ক্ষতি। তাই যে ভাবেই হোক সুগারকে বশে রাখতে হবে। আর সেই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে জোয়ান জলের মতো একটি অ্যান্টিডায়াবেটিক গুণ যুক্ত পানীয়তে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা ঘুমোতে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই জোয়ান পানি খান।
ইনফেকশনের ফাঁদ এড়াতে
এই পানীয়তে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানের ভাণ্ডার। যে কারনে খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়ার ভবলীলা সাঙ্গ করে ফেলা সম্ভব। তাই আপনার রাতের ডায়েটে অবশ্যই রাখতে পারেন এই জোয়ান মেশানো পানি। এই পানীয় পান করলেই সুস্থ থাকার পথে এক কদম এগিয়ে যাবেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org