দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেডে নিজেদের মালিকানাধীন শেয়ার শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করবে নোভারটিস।
এই বিষয় নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেড (এনবিএল)। প্রয়োজনীয় সকল আনুষ্ঠিকতা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এনবিএল -এর অধিকাংশ মালিকানা রেডিয়েন্টের কাছে স্থানান্তরের মাধ্যমে নোভারটিসের লক্ষ বর্তমান আইনি সত্তার মাধ্যমে বাংলাদেশে তাদের বিশ্বমানের ব্র্যান্ডগুলোর সরবারহ রোগীদের কাছে অব্যাহত রাখা।
১৯৭৩ সাল থেকে নোভারটিস ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে নোভারটিস।
বাংলাদেশে এনবিএল -এর মাধ্যমে ব্যবসার ধারাবাহিকতা এবং উদ্ভাবনী ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিতে অঙ্গীকারবদ্ধ নোভারটিস। এছাড়া, এনবিলের অধীনে থাকা সব স্থায়ী কর্মীকে কমপক্ষে ৩ বছর একই সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে রেডিয়েন্ট। এই হস্তান্তরের মাধ্যমে কর্মীদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে; পাশাপাশি, এটি বাংলাদেশে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় সাধনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
আজ (৫ ডিসেম্বর) আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেলা ১১টায় শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা দেয়া হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন নোভারটিসের হেড এশিয়া অ্যাসপায়রিং মার্কেটস কেভিন জু ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সিনা ইবনে জামালী। এ সময় দুই প্রতিষ্ঠানেরই ঊর্ধ্বতন অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
নোভারটিসের হেড এশিয়া অ্যাসপায়রিং মার্কেটস কেভিন জু বলেন, “গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা এনবিএল -এ আমাদের শেয়ার শীর্ষস্থানীয় একটি দেশীয় ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমাদের উদ্ভাবনী ওষুধগুলোর মাধ্যমে রোগীদের সেবা প্রদান নিশ্চিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; পাশাপাশি, আমরা বাংলাদেশের মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন ও তাদের সুদীর্ঘ জীবন অর্জনে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। উপরন্তু, আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের কর্মীদের প্রতি ন্যায্য আচরণ নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় রেডিয়েন্টকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।”
রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী তার বক্তব্যে রেডিয়েন্ট এবং নোভারটিসের মধ্যে নতুন ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন, এই অংশীদারিত্ব দেশের মানুষের জন্য নোভারটিসের উদ্ভাবনী পণ্য সরবরাহে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি নোভারটিসের পূর্ববর্তী কোম্পানি সিবা-গেইগি এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে নোভারটিসের উল্লেখযোগ্য অবদানের প্রশংসা করেন। এ শেয়ার হস্তান্তর উভয় প্রতিষ্ঠান এবং বৃহত্তর পরিসরে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। রেডিয়েন্ট ফার্মার সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানটির পোর্টফলিওতে ১শ’র বেশি নিবন্ধিত ব্র্যান্ড এবং ১২টি আন্তর্জাতিক অংশীদার রয়েছে। এই মালিকানা স্থানান্তর দীর্ঘমেয়াদে উভয় প্রতিষ্ঠানের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে ও ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org