দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পেটের চর্বির কয়েক ইঞ্চি ফারাক চোখে নাও পড়ে, তবে পরের দিনের জন্য নিজেকে তৈরি করেন কীভাবে? তাহলে বেশি পরিমাণে হেঁটে ক্যালোরি ঝরাবেন কীভাবে? আজ সেটিই জেনে নিন।
ভোরবেলায় কষ্ট করে উঠে উর্ধ্বশ্বাসে হাঁটাহাঁটি চলছে। অথচ দেখা যাচ্ছে যতোটা ফলের আশা ছিল, তা পাওয়া যাচ্ছে না। শীতের সকালে বিছানার আরাম থেকে নিজেকে টেনে বের করে শরীরচর্চার জন্য প্রস্তুত করতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ থাকে। তার উপর যদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পেটের চর্বির কয়েক ইঞ্চি ফারাক চোখে না পড়ে, তবে পরের দিনের জন্য নিজেকে তৈরি করেন কীভাবে?
এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, হাঁটার মতো ভালো শরীরচর্চা দু’টি নেই। চাইলে শুধু হেঁটে শরীর ঝরঝরে রাখতে পারেন। ঝরাতে পারেন বেশি ক্যালোরি।
দিল্লির সি কে বিড়লা হাসপাতালের ফিজ়িওথেরাপির বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক সুরেন্দ্র পাল সিংহ বলেছেন, হেঁটে সবচেয়ে বেশি ক্যালোরি ঝ়়রাতে চাইলে আপনাকে বেশ কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করতে হবে। সেই কৌশলগুলো ঠিকঠাক প্রয়োগ করলেই হাঁটার সবচেয়ে বেশি সুফল পাবেন।
# চলার পথের দৈর্ঘ্য নয়, হাঁটার গতি আপনাকে বৃদ্ধি করতে হবে। বেশি ক্যালোরি ঝরাতে হলে জোরে হাঁটতে হবে। এতে করে হৃদস্পন্দনের মাত্রাও বাড়বে। আবার ক্যালোরি ঝরবে বেশি।
# সঙ্গী কিংবা বন্ধুর সঙ্গে হাঁটার চেষ্টা করুন। একজন সঙ্গী থাকলে শরীরচর্চা করার বাড়তি প্রেরণা পাওয়া যাবে। স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতাও হবে। যা শরীরের জন্য আখেরে ভালোই হবে।
# হাঁটার পাশাপাশি স্ট্রেন্থ ট্রেনিংও করুন। শরীরে পেশি তৈরি হলে মেটাবলিরক রেটও বৃদ্ধি পায়। তাতে ক্যালোরি খরচ হয় আরও অনেক বেশি।
# প্রথমে হাঁটার ভঙ্গি ঠিক করুন। হাঁটার সময় পিঠ রাখতে হবে ঋজু। তলপেট ও কোমরের নীচের দিকের পেশির কাজ হবে অনেক বেশি। তখন হাঁটার সময় হাত দুলবে। এতে হাঁটতে গিয়ে চোট লাগার ঝুঁকিও কমবে। হাঁটার সুফলও পাওয়া যাবে অনেক বেশি।
# হাঁটার পূর্বে, পরে ও হাঁটার সময় প্রয়োজন মতো পানি খেতে হবে। হাঁটার জন্য সব সময় ভালো ও আরামদায়ক জুতা পরতে হবে। যাতে পায়ের পাতা ও অস্থিসন্ধিতে অযথাই চাপ না প়ড়ে।
# ফিটনেস ট্র্যাকার বা কোনও অ্যাপ মনিটরে নজর রাখুন কতোটা হাঁটলেন, কতোক্ষণ হাঁটলেন কিংবা কতোটা ক্যালোরি ঝরলো। তাতে যেমন আপনি উদ্বুদ্ধ হবেন, তেমনি প্রয়োজন অনুযায়ী হাঁটার সময় নিয়ন্ত্রণও করতে পারবেন অনায়াসে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org