দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যাদের সুগার রয়েছে, তারা অনেক ভেবেচিন্তেই খাবার খান। স্বাস্থ্যকর হলেও আম, লিচুর মতো ফল খাওয়ার ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সেখানে কমলালেবু খাওয়া আসলে কতোটা সুরক্ষিত?
বাতাসে আর্দ্রতা কম ও কমলালেবুর গন্ধ বেশি। মিঠে রোদ মুখ ফেরালেও কমলালেবুর কোয়ার থেকে দূরে থাকা যাবে না। বছরের এই একটি সময় কমলালেবু দেখা যায়। সুতরাং, এই সময় মন ভরে কমলালেবু খেতে হবে। তবে ডায়াবেটিস থাকলে কী কমলালেবু খাওয়া যাবে?
যাদের ডায়াবেটিস অর্থাৎ সুগার রয়েছে, তারা অনেক ভেবেচিন্তেই খাবার খান। স্বাস্থ্যকর হলেও আম, লিচুর মতো ফল খাওয়ায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সেখানে কমলালেবু খাওয়া কতোটা সুরক্ষিত? এই সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমকে কলকাতার বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রুদ্রজিৎ পাল বলেছেন যে, ‘কমলালেবু একদম সেফ হিসেবে বিবেচিত। বরং কমলালেবু খেলে ডায়াবেটিসের রোগীরা উপকারও পাবেন।’ কী-কী উপকার পাওয়া যাবে, সেটি আজ জেনে নিন।
ভিটামিন সি’তে ভরপুর
কমলালেবুর মধ্যে ভিটামিন সি বিদ্যমান, যা দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে পারে এবং কোলাজেন গঠনে সাহায্যও করে। কমলালেবু খেলে ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে। সেইসঙ্গে ত্বক, হাড়ের স্বাস্থ্য ভালোও থাকবে। ভিটামিন সি দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও ফ্রি র্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াইও করে। প্রি-ডায়াবেটিক অবস্থায় থাকলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয় ভিটামিন সি।
ফাইবারে পরিপূর্ণ
দেহে গ্লুকোজ়ের মাত্রা ঠিক রাখতে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার প্রয়োজন। কারণ ফাইবার অতিরিক্ত শর্করাকে শুষে নেয়। ডাক্তার পালের ভাষায়, কমলালেবুর মধ্যে যে ফাইবার বিদ্যমান, তা ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে হজমে সহায়তাও করে। হজমজনিত সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই কমলালেবু খেতে হবে।
কমলালেবু খেলে কী সুগার বাড়ে?
চিকিৎসক রুদ্রজিৎ বলেন, ‘কমলালেবু খেলে সুগার লেভেল মোটেও বাড়ে না।’ যে সব খাবার, ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম, সেগুলো ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য একদমই সুরক্ষিত। সেইসব খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো আশঙ্কাও থাকে না। কমলালেবুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হলো ৩৫। সুতরাং, নিশ্চিন্তে আপনি কমলালেবু খেতেই পারেন। তবে কমলালেবুর রস, বিশেষত প্যাকেটজাত কমলালেবুর রস এড়িয়ে চলায় ভালো। বাজারচলতি কমলালেবু রসে চিনি এবং অন্যান্য রাসায়নিকও থাকে, যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও ক্ষতিকর। তাজা ফল খাওয়াই সকলের স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org