দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেরই অফিস নিয়ে দুশ্চিন্তার যেনো শেষ থাকে না। বিশেষ করে কর্পোরেট সেক্টরে কাজ করতে গিয়ে নাকানি-চোবানি খান অনেকেই। তবে জীবনে স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট বেশ জরুরি।

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্সে মোটেও বিশ্বাসী নন প্রখ্যাত উদ্যোগপতি নারায়ণ মূর্তি। তার মতে, ‘ভারতের কর্মক্ষমতাই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম।’ তাই সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার পক্ষে রায় দেন তিনি। তার এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক কিন্তু এখনও চলছে। এদিকে লিঙ্কডইনের গবেষণা বলছে যে, ভারতীয় অফিস কর্মীদের অধিকাংশ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন। এর থেকে অবসাদে চলে আসার ঘটনাও আজকাল আকছাড় ঘটছে। তর্ক বিতর্ক যাই হোক না কেনো, বাস্তবে পেশাগত কারণে মানসিক সমস্যার বাড়বাড়ন্তও এখন দিকে দিকে।
একদিকে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্যতা নিয়েও দুশ্চিন্তা, আবার অপরদিকে যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনেরও অভাব, কর্মক্ষেত্রে রাজনীতি, চোখের সামনে অযোগ্যতাকেও স্বীকৃতি প্রদান ইত্যাদি নানা কারণে মানসিক উদ্বেগ ও অবসাদ স্বাভাবিক ঘটনা। তবে তা বলে তো থেমে থাকলে মোটেও চলবে না। দুশ্চিন্তামুক্ত হতে প্রয়োজনীয় কৌশল অবলম্বন করতে হবে। মন দিয়ে কাজ করে নিজের যোগ্যতা বাড়াতে হবে আরও বেশি করে।
ইতিবাচক শুরু
অফিসের অবসাদকে দূরে রাখতে হলে দিনের শুরুটা ভালো করতে হবে। দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে সব কিছুই দেরি হয়ে যাবে। হাতে সময় কম থাকার কারণে গুছিয়ে কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই ভোরবেলাতেই ঘুম থেকে উঠুন। দেখবেন ঘরের সমস্ত কাজ ও দায়িত্ব হেসেখেলে করে ফেলতে পারবেন। সকালের ইতিবাচক এই পদক্ষেপই সারাটা দিন কাজ দেবে। অফিসের দুশ্চিন্তা ও অবসাদ অনেকটাই দূরে চলে যাবে।
গুছিয়ে নিন
কোন কাজের পর কোনটা করবেন তার একটা তালিকাও তৈরি করে নিতে হবে। এতে করে খুবই সুবিধা হয়। বাড়ি হোক কিংবা অফিস গুরুত্ব অনুযায়ী কাজ ভাগ করে নিন। অফিসের ডেস্কে একটি টাইমটেবলও রাখুন। এভাবে কাজ হয়ে গেলে তাতে টিক দিয়ে দিন। দেখবেন দুশ্চিন্তা ক্রমশ কমতেই থাকবে।
মাল্টিটাস্কিং মিথ
মাল্টিটাস্কিং-এর মিথের ঘোল খাইয়ে অতিরিক্ত কাজের বোঝাও চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা অনেক বেসরকারি সংস্থার রয়েছে। বসকে সবসময় খুশি করতে গিয়ে একসঙ্গে একগাদা কাজ নিয়ে কখনও বসে পড়বেন না। দক্ষতা অনুযায়ীই কাজ করুন। সবচেয়ে বড় কথা হলো পেশাদার হোন। নিজের দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কি-না তা দেখুন। বাকি কাজে অপ্রয়োজনে মাথা ঘামানোর কোনোই দরকার নেই। তাতে দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যাবে।
পারফেকশন পানিশমেন্ট
কর্তৃপক্ষ যেমনটি কাজ চাইছেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঠিক ততোটাই দিন। সব কাজ করার সময় পারফেকশনের পানিশমেন্টে নাকানিচোবানি খেয়ে লোকের প্রশংসা কুড়োনোর কোনো দরকার নেই। এতে করে নিজের উপর চাপ বাড়ে। কাজকে খুব ব্যক্তিগত স্তরে নিয়ে যাবেন না কখনও, প্রফেশনাল থাকতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org