দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিয়ের বয়স হলে বাবা-মা বিয়ের জন্য চাপ দিবেন সেটিই কিন্তু স্বাভাবিক। তবে আপনি কী সিদ্ধান্ত নিবেন সেটি কিন্তু আপনার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। চিন্তা-ভাবনা করেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বান্ধবীর বিয়েতে সাজগোজের পর মাকে শাড়ির কুচি ধরার জন্য ডাক দেওয়াও যেনো অনেক সময় এক বিড়ম্বনায় পরিণত হয়। শাড়ি ঠিক করতে করতে মা ঘুরে ফিরে সেই আপনার বিয়ের প্রসঙ্গই তুলবেন। খোঁপায় মালা পরবেন বলে বাবার কাছে আবদার করলেও হয় সমস্যা। যেনো আপনি বিয়ে না করলে সূর্য-চাঁদ-তারার দল আকাশে ওঠাই বন্ধ করে দেবে! যদি বিয়ের কথা এড়িয়ে যান কিংবা বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েই দেন, তাহলে তো হবে কেলোর কীর্তি। বিয়ে করার উপকারিতা নিয়ে ঘণ্টাখানেকের বক্তৃতা চলবে উভয় পক্ষের তরফ থেকে! ধুনো দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী, আত্মীয়রা তো সঙ্গে আছেনই। তবে দেখুন তো, বিয়ের জন্য জোর করতে গিয়ে আপনার বাবা-মাও এই হাস্যকর প্রশ্নগুলো করেন কি না?
লোকে কী বলবে?
সবার আগে আসে সেই চিরাচরিত একটি প্রশ্ন, ‘লোকে কী বলবে?’ আপনি বিয়ে করবেন, কবে বিয়ে করবেন কিংবা কাকে বিয়ে করবেন তা নিয়ে লোকে কী বলবে কিংবা লোকে বললেও তাতে কী আসে যায়! এই সহজ কথাটা বাবা-মাকে বোঝানো প্রায় অসম্ভব।
ছোটদের বিয়ে
পাশের বাড়ির কাকু-কাকিমাদের ভয় দেখিয়েও কাজ না দিলে বাবা-মায়েরা ছোটদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসেন অনেক সময়। দূর সম্পর্কের ভাই-বোন, বন্ধুর ভাই-বোন, বা পাড়ার কম বয়সীদের বিয়ের কার্ড যেনো অভিভাবকদের ধারালো অস্ত্র। তা দিয়ে আক্রমণও চলে নিয়মিত। ছোটরা বিয়ে করে সুখে সংসার করছে বলে নাকি আপনাকেও বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে!
ভালো ছেলে কিংবা মেয়ে
বাবা মায়েদের আরেকটি অস্ত্রই হলো পাত্র কিংবা পাত্রীর বংশ। সৎ বংশ, বংশতালিকা, বংশের ইতিহাস জানতে পারলে তার সুখ্যাতির গুঁতোয় আপনার কান যেনো ঝালাপালা হবেই। সে যদি সরকারি চাকুরিজীবীও হন, তাহলে আপনাকে রক্ষা করার ক্ষমতা কারও নেই- সেটি বলা যায়।
সংসার ও সন্তান
বয়স বাড়লে নাকি তার প্রভাব সংসার ও সন্তানের উপরে পড়ে। বেশি বয়সে সন্তানের বাবা-মা হওয়ার অনেক সমস্যাও রয়েছে, বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে। তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নেওয়া দরকার। এই যুক্তি প্রত্যেক বাবা-মায়ের কাছে এক চিরন্তন সত্য একটি বাক্য। এর বিপক্ষে কোনও যুক্তিই খাটানো যাবে না।
‘আমাদের দায়িত্ব শেষ করবো’
‘তুই বিয়ে করে নিলেই আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে’- এই ধরণের কথা প্রায় সব বাবা-মা বলেন। অথচ বিয়ের পরে তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য যে আরও বেড়ে যায়, সে খেয়াল তখন তাদের মোটেও থাকে না।
বয়সের যুক্তি দেখান
বেঁচে থাকতে থাকতেই সন্তানের বিয়ে দেখে যেতে চান, বা নাতি-পুতি দেখে যেতে চান- এই আবদার প্রায় বাবা-মায়ের থাকে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org