দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টানা ১২তম বারের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫ বাংলাদেশ পর্বের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
এই উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বেসিস একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনে করে। বেসিস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির, বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (প্রশাসন) ইমরুল কায়েস পরাগ, মোস্তাইন বিল্লাহ এবং এ এইচ এম রোকমুনুর জামান রনি। নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ পর্বের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান এবং আরিফুল হাসান অপু।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসার উদ্যোগে আয়োজিত হয় নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ। এই প্রতিযোগীতায় টানা তিনবারসহ সর্বমোট চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্র্রেশন (নাসা) আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের ১৮৫টি দেশের প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, আর্টিস্ট, শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তাদের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবী তরুণদের একত্রিত করে পৃথিবীর বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এরই অংশ হিসেবে বেসিসের উদ্যোগে বাংলাদেশের ৯টি শহর (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) থেকে স্টুডেন্টদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় এই বৃহৎ হ্যাকাথনের বাংলাদেশ পর্ব। বিগত ১১ বছরে বিশ্বব্যাপী এই প্রতিযোগীতায় টানা তিনবারসহ সর্বমোট চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নানাবিধ কার্যক্রম আয়োজন করা হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ধারণাকে আরও শাণিত করতে আয়োজন করা হবে বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্কশপ ও সেমিনার। এছাড়াও, অংশগ্রহণকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও ডেটা বিশ্লেষণ সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য অনলাইনে একটি ডাটা বুট ক্যাম্পেরও আয়োজন করা হবে। প্রতিযোগিতায় আগ্রহী টিমগুলোর জন্য বিশেষ সুবিধা হিসেবে তাদের প্রকল্প প্রস্তুতিতে সহায়তার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ মেন্টরের সাথে সংযুক্ত করা হবে, যাতে তারা মূল হ্যাকাথনের জন্য তাদের প্রজেক্টকে যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে পারে। পাশাপাশি, প্রতিটি টিমকে প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদান করা হবে, যা তাদের উদ্ভাবনী ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আজ থেকে আগ্রহীগণ https://nsac.basis.org.bd/ লিঙ্কের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন “বাংলাদেশের উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রযুক্তি দক্ষতাকে বৈশ্বিক মঞ্চে তুলে ধরতে বেসিস প্রতিবারই নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের আয়োজন করে আসছে। টানা তিনবারসহ সর্বমোট চারবার বিশ্ব সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন আমাদের তরুণ প্রতিভাবানদের মেধারই প্রমাণ। আমরা আশাবাদী, এবারও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে বিশ্বকে মুগ্ধ করবে। একটা প্রতিযোগিতা থেকে আমরা নতুন নতুন অনেক বিষয় শিখি। পাশাপাশি, নতুন নতুন অনেক উদ্ভাবন বের হয়ে আসে। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা সব ক্ষেত্রে ভালো করছে। আমি আশাবাদী, মহাকাশ গবেষণায়ও আমাদের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দেবে এবং উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে নিবে।”
বেসিস চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আমরা আমাদের শিক্ষার্থীরাদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরিতে কাজ করছি। আমরা এবার ১২তম বারের মতো এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। আমি আশাবাদী এবছরও আমাদের প্রতিযোগীরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।”
এই আয়োজন উপলক্ষে মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান বলেন, “আমরা আশা করছি এবার নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে ২ লাখ শিক্ষার্থীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত করার পাশাপাশি সরাসরি ও প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।
এটি কেবলমাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি উদ্ভাবনী চিন্তাধারা ও বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত ওয়ার্কশপ ও সেমিনার শিক্ষার্থীদের চিন্তাভাবনা ও সমস্যার সমাধানে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। অনলাইনে ডাটা বুথ ক্যাম্প এবং বিশেষজ্ঞ মেন্টরের সহায়তা তাদের প্রকল্প উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রযুক্তি শিক্ষায় আমাদের অগ্রগতির মাপকাঠি হিসেবে এই ধরনের প্রতিযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের প্রমাণ করেছে; এখন আমাদের সময় এগিয়ে এসে বিশ্বকে দেখানোর যে, আমরা সৃজনশীলতা এবং সমস্যার সমাধানে কতটা দক্ষ।” খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org