দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া বা চারপাশের নানা ঘটনার কারণে বিভ্রান্তি আসা স্বাভাবিক একটি বিষয়। সেই কারণে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়ও নষ্ট করেন। এই বিষয়ে কী বলেছেন বিশেষজ্ঞরা?
আসলে শৃঙ্খলা হলো একটি ধারাবাহিক অভ্যাস। সুশৃঙ্খল জীবন পেতে হলে সবারই প্রথমেই দরকার ইচ্ছাশক্তি। আলস্য ও অজুহাতকে গ্রাহ্য না করে লক্ষ্যে স্থির হয়ে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করায় সুশৃঙ্খল জীবনের প্রকৃত পদক্ষেপ। অবশ্য সে জন্য রাতারাতি জীবন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। বরং ধীরে ধীরে এগিয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাতে সাহায্য করবে বেশ কয়েকটি অভ্যাস।
নির্দিষ্ট রুটিন মেপে চলা
জীবনে শৃঙ্খলা আনতে হলে প্রথমেই আপনাকে একটি রুটিন তৈরি করে ফেলতে হবে। অর্থাৎ “চক আউট’ করে নিতে পারেন। কোন কাজের পর কোন কাজটি আপনি করবেন, তা দিনের শুরুতেই আপনাকে মনে মনে স্থির করে নিতে হবে। প্রয়োজনে লিখেও রাখুন। প্রথমেই যে কোনও একটি অভ্যাস বেছে নিতে হবে। যেমন, শরীরচর্চা, পড়াশোনা, প্রতিদিন একই সময় ঘুম থেকে ওঠা, ইত্যাদি। ক্রমে সেটি দেখবেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা
মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া বা চারপাশের নানা ঘটনার কারণে বিভ্রান্তি আসা স্বাভাবিক বিষয। সে কারণে, অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়ও নষ্ট করেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এগুলো জীবনে এগিয়ে চলার পক্ষে একটি বাধা। এগুলো কাটিয়ে উঠতে হলে প্রয়োজন মানসিক জোর। প্রলোভনকে জয় করেই নিজের পরিবেশ পরিবর্তনের চেষ্টা করুন। নির্দিষ্ট সময়ের বেশি মোবাইল ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা থেকে নিজেকেই বন্ধ করতে হবে।
কঠিন কাজগুলোই আগে করুন
এক গবেষণায় দেখা গেছে, কঠিন কাজ আগে সেরে নিলে পরের কাজগুলো আরও সহজ হয়ে যাবে। যে কারণে উৎপাদনশীলতাও অনেকখানি বেড়ে যায়।
সিদ্ধান্ত নয়- শৃঙ্খলায় বিশ্বাস
এক গবেষণায় দেখা গেছে, সিদ্ধান্ত বা অনুপ্রেরণার আয়ুষ্কাল বড়ই কম। কারও অনুপ্রেরণায় সঠিক কাজ করার সিদ্ধান্ত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমেও আসে। তার চেয়ে সেই সঠিক কাজটিকেই অভ্যাসে পরিণত করলে জীবনের শৃঙ্খলা আসবে খুব সহজেই।
স্পষ্ট লক্ষ্য রাখতে হবে
সুশৃঙ্খল জীবনের জন্য একটি স্পষ্ট লক্ষ্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রয়োজনে নিজের লক্ষ্যের তালিকা তৈরি করে নিন। একটি করে ধাপ পেরোতে শুরু করলে দেখবেন আপনার আগ্রহ আরও বাড়ছে। আবার জীবনে ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে।
বিরতি গ্রহণ করুন
সুশৃঙ্খল জীবন পেতে হলে বিরতিরও প্রয়োজন রয়েছে। টানা মানসিক চাপ, দীর্ঘক্ষণ ধরে কাজ করা, ইত্যাদি শরীর ও মনকে ক্লান্ত করে তোলে। যে কারণে উৎপাদনশীলতাও কমতে থাকে। তাই মাঝে-মধ্যে বিরতি নেওয়াটাও অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org