দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি ঋতুস্রাব চলাকালীন অতিরিক্ত রক্তপাত, পেটে যন্ত্রণা, পেটফাঁপা, মাথা ঘোরা, পেশিতে টান লাগার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় অনেক মহিলাকেই। এর উপর হরমোনের হেরফেরে মনমেজাজ বিগড়ে থাকে অনেক সময়।
প্রতি মাসেই সেই একই সমস্যা। ঋতুস্রাবের কষ্ট কিছুতেই যেনো পিছু ছাড়ছে না। তবে যাদের পরীক্ষা, এই কষ্ট নিয়ে দীর্ঘ সময় পরীক্ষার হলে বসে থাকা বেশ কষ্টকর। অতিরিক্ত রক্তপাত, মাথা ঘোরা, পেটে যন্ত্রণা, পেটফাঁপা, পেশিতে টান লাগার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় অনেককে। এমনিতেই যাদের পরীক্ষার চাপ থাকে। তার উপর হরমোনের হেরফেরে মনমেজাজ বিগড়ে থাকাও অস্বাভাবিক কিছু নয়।
স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে এতোটাই কষ্ট হয় যে, ওষুধ ছাড়া এক পা ফেলার উপায়ও থাকে না। ক্ষতি হতে পারে জেনেও মুঠো মুঠো ওষুধ খেয়ে ফেলেন অনেকেই। তবে এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, এই সমস্যার সমাধান রয়েছে আনারসে। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক পূর্ব থেকে যদি এই ফলটি খেতে আরম্ভ করেন, সেই ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
আনারসে কী এমন রয়েছে?
আনারসের মূল উপাদানই হলো ব্রোমেলাইন। প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি ভিষণ কার্যকরী। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, জরায়ুর পেশি সঙ্কোচন, প্রসারণে যে ব্যথা-বেদনা হয়ে থাকে, তা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়াও এই ফলটিতে রয়েছে ভিটামিন সি ও ম্যাঙ্গানিজ়। ঋতুস্রাব চলাকালীন অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, সকলের শরীরের গঠন এক রকম নাও হতে পারে। তাই আনারস খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়াটা জরুরি।
অনেকেই হয়তো বলবেন যে, এই সময় শরীরচর্চাই করা যায় না। তবে ঋতুস্রাব চলাকালীন ব্যথা-বেদনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু হালকা ব্যায়াম করা যেতেই পারে। তাতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। তবে শারীরিক কষ্ট বাড়লে শরীরচর্চা না করাই ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org