দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, কুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলে থাকা ইউক্রেনীয় সেনারা আত্মসমর্পণ করলে তারা প্রাণভিক্ষা পাবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুক্রবার এই কথা বলেছেন পুতিন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, কুরস্কে পুরোপুরি ঘেরাও হওয়া ইউক্রেনীয় সেনারা একদম অসহায় অবস্থায় পড়ে আছে। এই অবস্থায় তাদের প্রাণভিক্ষা দেওয়ার জন্য পুতিনের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। নইলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভয়াবহতম গণহত্যার একটি সেখানে সংঘটিতও হতে পারে। তবে নিজ সেনাদের ‘ঘেরাও’ হওয়ার খবরকে রাশিয়ার ছড়ানো গুজব বলেই উড়িয়ে দেয় ইউক্রেন।
তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে, কুরস্কে থাকা ইউক্রেনের সেনারা বেশ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই রয়েছে।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত রুশ নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় পুতিন বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানের পর তার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি বলেন, কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনারা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যে ধরনের অত্যাচার চালিয়েছে, তা সন্ত্রাসবাদের পর্যায়েই পড়ে। তবে মানবতার খাতিরে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান অবশ্যই বিবেচনা করবেন।
তিনি বলেছেন যে, ইউক্রেনীয় সেনারা যদি অস্ত্র ত্যাগ করে আত্মসমর্পণ করে, তাহলে তাদের হত্যা করা হবে না এমন নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক এবং রাশিয়ার আইন অনুযায়ী তাদের সঙ্গে আচরণবিধিও বজায় রাখা হবে।
‘ফলপ্রসূ’ আলাপের দাবি ডোনাল্ড ট্রাম্পের
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভালো ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই দিয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মস্কোতে পুতিন এবং বিশেষ মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে বৈঠকের পর ক্রেমলিন বলেছে যে, তারা শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলাপও করেছে। রাশিয়া জানিয়েছে যে, তারাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো আশাবাদী। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফ হতে ওই মন্তব্য এলো। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার বিষয়েও লেখেন, ‘এই ভয়াবহ এবং রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হওয়ার খুব ভালো সম্ভাবনাও রয়েছে।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org