দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাড়াবাড়ি রকমের ঘামাচি থেকে সংক্রমণ হয়ে এক সময় অস্বস্তিকর চুলকানি হতে শুরু করে। তখন হিতে বিপরীতও হয়। তাই আপনাকে শুরুতেই ঘামাচি প্রতিরোধ করতে হবে।
ধীরে ধীরে গরম বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শারীরিক অস্বস্তি। বাইরে বের হলেই দরদর ঘাম ঝরছে। ঘামে ভিজে চুপচুপে হয়ে যাচ্ছে পরনের পোশাক। চিকিৎসকরা বলেন, ঘাম হওয়াও ভালো। কারণ ঘাম হলে শরীরের তাপমাত্রাও সঠিক থাকে। শরীরের চাপা অংশে ঘাম জমে থাকলে ত্বকে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। ঘামের সঙ্গে ত্বকের যে সমস্যা ওতপ্রোতভাবে জড়িত, আর তা হলো ঘামাচি। চিকিৎসা পরিভাষায় ঘামাচিকে বলা হয় ‘মিলিয়ারিয়া’। গরমে ঘাম এবং ঘামাচির ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
ঘামাচি কেনো হয়?
ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ উত্তমকুমার লেংকা বলেছেন , ‘ঘাম ঠেকাতে গিয়ে অনেকেই পুরু করে পাউডার ব্যবহার করেন। এতে সাময়িকভাবে হয়তো ঘাম কমানো সম্ভব। তবে এতে আদতেও সমস্যা আরও বেড়ে যায়। কারণ পাউডার ব্যবহারে ঘামাচিসহ ত্বকের অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। যে গ্রন্থি থেকে ঘাম নিঃসরণ হয়, পাউডার ব্যবহারের কারণে ময়লা জমে সেই মুখ বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে ঘাম বাইরে বের হতে পারে না। ঘর্ম গ্রন্থির মধ্যে ঘামও জমতে শুরু করে। তারপর তা বাইরে বেরিয়ে আসে ঘামাচি হিসাবে।’ এই ধরনের সমস্যাকে খুব বেশি আমলও দেন না অনেকেই। ঠিক হয়ে যাওয়ার আশায় থাকেন অনেকেই। তবে পরবর্তীকালে অনেক সময় এটিই ঝঞ্ঝাট তৈরি করে। বাড়াবাড়ি রকমের ঘামাচি থেকে সংক্রমণ হয়ে অস্বস্তিকর চুলকানিও হতে শুরু করে। তখন হিতে বিপরীতও ঘটে। আর তাই শুরুতেই ঘামাচি প্রতিরোধ করতে হবে।
প্রতিকারের উপায় কী?
# বাড়ি ফিরতে যতোই দেরি হোক না কেনো, ফিরেই গোসল করে নিন। শরীরে ঘাম বসতে দিলে সমস্যা। ঘাম বসেই ঘামাচির জন্ম হয়।
# বাড়ির বাইরে থাকলেও ঘাম মোটেও বসতে দেওয়া চলবে না। খুব বেশি ঘেমে গেলে ভেজা গামছা কিংবা তোয়ালে দিয়ে বার বার মুখ, গলা, ঘাড়, হাত-পা মুছে নেওয়াও প্রয়োজন। তাই সঙ্গে সুতির তোয়ালে কিংবা কাপড় রাখাটা জরুরি।
# ত্বক শরীরের অতি স্পর্শকাতর একটি অংশ। যে কারণে বেশিক্ষণ রোদে ঘোরাঘুরি করলে ঘামাচিও হতে পারে। তাই যতো কম রোদে বের হওয়া যায়, ততোই ভালো।
# গরমে ঘামাচি এড়াতে সুতির পোশাক পরতে বলেছেন চিকিৎসকরা। সুতি কাপড়ের মধ্যেদিয়ে বায়ু চলাচল বেশি করে। তাই গরমে যে ঘাম হয়ে থাকে, সেটি সহজেই শুষে নেয় সুতির পোশাক। যে কারণে শরীর ঠাণ্ডা থাকে।
# গরমে হালকা রঙের পোশাক পরতে বলেছেন চিকিৎসকরা। কারণ গাঢ় রঙের পোশাক পরলে শরীরে তাপের প্রভাবও বেশি পড়ে বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
# গরমে অনেকেই নানা সুগন্ধিও ব্যবহার করেন। এই ধরনের প্রসাধনী ঘামাচির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। ট্যালকম পাউডারের মতো সুগন্ধি ঘর্মগ্রন্থির মুখ আরও বন্ধ করে দেয়। যে কারণে ঘামাচির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org