দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের ক্ষুদ্রতম পেসমেকারটি ছোট একটি চালের দানার মতো আকার। এতেই পুরে দেওয়া হয়েছে যন্ত্রপাতি। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট পেসমেকার তৈরি করে রীতিমতো চমকে দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এটির আকার ছোট্ট একটি চালের দানার মতোই। এর মধ্যেই দিব্যি ভরে করে দেওয়া হয়েছে সকল যন্ত্রপাতি। বিশ্বের ক্ষুদ্রতম পেসমেকার আবিষ্কার করে চমকে দিয়েছেন আমেরিকার নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। কেনো তৈরি করলেন এমন একটি যন্ত্র?
সম্প্রতি ‘নেচার’ জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষকরা লিখেছেন, সাময়িকভাবে ব্যবহারের জন্যই এতো ছোট পেসমেকার তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের কথা মাথায় রেখে এই যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে। জন্মগতভাবে হার্টের সমস্যায় ভুগছে, এমন শিশুদের শরীরে সেটি স্থাপন করা খুবই সহজ হবে। বড়দের জন্য যে পেসমোর রয়েছে, এটি শিশুর শরীরে বসানো যায় না। সেই ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারে সমস্যা হয়। তাই এতো ছোট যন্ত্র তৈরির কথা ভাবা হয়।
হৃৎস্পন্দন যদি অনিয়মিত হয়েই যায়, তখন পেসমেকার বসানোর প্রয়োজন পড়ে। হৃৎস্পন্দন সঠিক ছন্দে রাখার বৈদ্যুতিক যন্ত্রই হলো এই পেসমেকার। হার্টের নিজস্ব পেসমেকার কিংবা এসএ নোড যথেষ্ট পরিমাণে কিংবা গতিতে স্পন্দন তৈরি করতে না পারলে কিংবা হৃদপিণ্ডে তড়িৎ পরিবহণের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে, তখন পেসমেকার বসিয়ে হৃৎপিণ্ডের গতি নির্দিষ্ট মাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয়ে থাকে। পেসমেকার স্থায়ী এবং অস্থায়ী দু’রকমই হয়ে থাকে। স্থায়ী পেসমেকার তাদেরই বসানো হয়, যাদের হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গেছে কিংবা দীর্ঘকালীন হার্টের সমস্যা রয়েছে। অস্থায়ী পেসমেকার সাধারণত হার্ট অ্যাটাক কিংবা হৃৎস্পন্দন আচমকা খুব কমে গেলে তখনই বসানো হয়। প্রয়োজন শেষ হলে সেটি শরীর থেকে বের করেও নেওয়া হয়। তবে এই প্রক্রিয়াটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এই বিষয়ে গবেষক জন এ রজার্স জানিয়েছেন, ছোট্ট পেসমেকারটি এমনভাবে তৈরি করা যে, প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে সেটি নিজে থেকেই শরীরের সঙ্গে মিশে যাবে। অস্ত্রোপচার করে বের করার দরকার হবে না। শিশুদের ক্ষেত্রে এমন পেসমেকার বসানো সহজ এবং নিরাপদ। সাধারণত শিশুদের শরীরে পেসমেকার বসালে সেটি শিশুর উচ্চতা এবং ওজন পরিবর্তন সাপেক্ষে বদলানোর প্রয়োজনও পড়ে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এলে তখন পেসমেকারের প্রয়োজন পড়ে না। তাই বার বার অস্ত্রোপচারের চেয়ে এমন পেসমেকারই আসলে নিরাপদ হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org